সংবাদদাতা, নয়াচর : নয়াচরে মৎস্য ও পর্যটন হাব তৈরির লক্ষ্যে আরও একধাপ এগল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বুধবার নয়াচর পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব তথা মৎস্য দফতরের প্রধান সচিব অত্রি ভট্টাচার্য। এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে সঙ্গে নিয়ে নয়াচর ঘুরে দেখেন তিনি। নয়াচরের মানচিত্র হাতে নিয়ে কোথায় কতগুলি মাছচাষের পুকুর রয়েছে, আর কোথায় জলাজমি রয়েছে তা-ও খতিয়ে দেখেন। এদিন তিনি নয়াচরের জেটিঘাট সংলগ্ন একটি অস্থায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। এলাকার পরিকাঠামোগত কী কী সমস্যা রয়েছে তা স্থানীয়দের থেকে জানতে চান রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে রাস্তাঘাট ও পানীয় জলের সমস্যার কথা জানান। এরপর মৎস্য, ভূমি-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। এদিনের সরেজমিন পরিদর্শনের পর নয়াচরে কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, সে সম্পর্কে একটি রিপোর্ট ফিরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে দেবেন অত্রি ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন : বিজেপির উসকানি
এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বৃহস্পতিবার হাওড়ার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মৎস্য দফতরের প্রধান সচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই নড়েচড়ে বসে নবান্ন। মুখ্যসচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধান সচিবদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন এবং নয়াচরে মৎস্য ও পর্যটন হাব করার ব্যাপারে চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হন। তারপরেই বুধবার নয়াচর পরিদর্শনে এলেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব। অবশ্য তার আগে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা নয়াচরে গিয়ে প্রাথমিক পরিদর্শন ও বৈঠক করেছেন। প্রাথমিকভাবে প্রশাসনের দাবি পরিকল্পিত মৎস্যচাষ, ফিশারিজ কলেজ, পর্যটন হাব করার ক্ষেত্রে এখানে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ জলাশয় ও জমিও এখানে রয়েছে। প্রায় দু’হাজার মৎস্যজীবী অস্থায়ীভাবে এখানে থাকেন। তবে সেখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্য জলের তলা দিয়ে বা উপর দিয়ে কেবল নিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তারা।
উল্লেখ্য, এই নয়াচর ১৯৮৮ সালে মৎস্য দফতরের হাতে এসেছিল। এখানে মোট জমির পরিমাণ ৪৬৬৩ হেক্টর। এর মধ্যে ১২.৫০ হেক্টর জমিতে জলাশয় রয়েছে। মোট ১৮৫৭টি জলাশয় আছে। যেখানে ফিশিং হাব তৈরি মতো উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে।