সংবাদদাতা, দিঘা : দীর্ঘ ব্যান পিরিয়ডের পর সমুদ্রে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। আর মাঝসমুদ্রে ট্রলার দুর্ঘটনা যেন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমুদ্রের চড়ায় ধাক্কা লেগে ট্রলারডুবির ঘটনা প্রতি বছর ঘটে। অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিবছরই বেশ কয়েকজন মৎস্যজীবীর প্রাণহানিও হয়। এমনকী কখনও আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রলার। দুর্ঘটনা ঠেকাতে এবার ‘টু ওয়ে কমিউনিকেশন’ প্রযুক্তি ব্যবহার করবে মৎস্য দফতর। এর মাধ্যমে ট্রলারে বিশেষ ধরনের ডিভাইস বসানো হবে।
আরও পড়ুন-জোড়া ফুলেই ভোট সকাল থেকেই ব্যাপক সাড়া শিয়ালদহে
প্রাথমিকভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, শঙ্করপুর, পেটুয়াঘাট, শৌলা প্রভৃতি মৎস্যবন্দর ও মৎস্য আহরণ কেন্দ্রে ২০টি ট্রলারে এই ডিভাইস বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ‘ইসরো’র থেকে এই প্রযুক্তি নিচ্ছে রাজ্য মৎস্য দফতর। সম্প্রতি দিঘা মোহনায় ট্রলারের মাঝিদের প্রশিক্ষণ শিবিরে এ-বিষয়ে প্রাথমিকভাবে তাঁদের অবহিত করে মৎস্য দফতর। মৎস্যশিকারে গিয়ে গভীর সমুদ্রে বিপদের সম্মুখীন হলে কী করবেন, অনেক সময় স্থির করে উঠতে পারেন না ট্রলারচালকরা। ফলে বাকি মৎস্যজীবীদেরও বিপদে পড়তে হয়। তার জন্যই এই প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্যোগী হয়েছে মৎস্য দফতর। টু ওয়ে কমিউনিকেশন অর্থাৎ দু’তরফের মধ্যে যোগাযোগ এবং তথ্য আদানপ্রদান চলবে। মাঝসমুদ্রে বিপদ বা দুর্ঘটনায় পড়লে ডিভাইসে লিখে অথবা ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে বিপদগ্রস্ত ট্রলারের চালকরা সহজেই বার্তা পাঠাতে পারবেন।
আরও পড়ুন-জেটি নিয়ে বেপাত্তা, নাজেহাল যাত্রীরা
এর জন্য দিঘা, শঙ্করপুর, পেটুয়াঘাট, শৌলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। প্রতিটি জায়গায় বসবে একটি করে সার্ভার। সমস্ত বিষয় সেখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ হবে। কন্ট্রোল রুম থেকে বিপদগ্রস্ত ট্রলারচালকদের কাছে বার্তাও পাঠাতে পারবে দফতর। এ ব্যাপারে জেলা-সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্তকুমার প্রধান বলেন, ‘ট্রলারগুলিতে যে ডিভাইস থাকবে, সেখান থেকে কীভাবে মৎস্যজীবীরা বার্তা পাঠাবেন, সে-ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য আমাদের কাছে নেই। ইসরো এ-ব্যাপারে আমাদের প্রশিক্ষণ দেবে। তারপর আমরা প্রশিক্ষণ দেব গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের।
আরও পড়ুন-বিশ্বভারতীতে মহিলা গবেষক নিগ্রহ পদক্ষেপ মঞ্জুরি কমিশনের
বর্তমানে এটি চালুর প্রক্রিয়া চলছে। সমুদ্রে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মৎস্যজীবীদের উদ্ধার এবং ট্রলার দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েক বছর আগে মৎস্য দফতর ড্যাট (ডিস্ট্রেস অ্যালার্মিং ট্রান্সমিশন) যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ নিলেও অধিকাংশ ট্রলারে সেটি বসানো হয়নি। যে সমস্ত ট্রলারে ড্যাট বসেছিল, সেগুলিও ব্যাটারি খারাপ হয়ে বিকল হয়ে যায়। ড্যাটের ব্যবহারের অনীহা দেখা দেয় ট্রলারচালকদের মধ্যে। ড্যাটের মাধ্যমে মৎস্যজীবীরা শুধু বার্তা পাঠাতে পারতেন। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তিতে দু’তরফই বার্তা চালাতে এবং পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে পারবে।