দুবাই, ৪ সেপ্টেম্বর : পাকিস্তান জিতল বলেই মহম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে বীরগাথা লিখতে হচ্ছে। একা কুম্ভ হয়ে লড়ে গেলেন পাক ওপেনার। কিন্তু তাতে ভুবি, হার্দিক, চাহালদের ব্যর্থতা ঢাকা পড়ছে না! ১৯তম ওভারে ভুবির দেওয়া ১৯ রান পাকিস্তানের জন্য উপহার হয়ে গেল। না হলে ম্যাচটা তবু থাকত।
আরও পড়ুন-ইডি মামলায় বিশাল স্বস্তি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের, এখনই কোনো কড়া পদক্ষেপ নয় তাঁর বিরুদ্ধে
অবিশ্বাস্য ফর্মে পাক ওপেনার। রোহিতদের ঘাড়ের উপর নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে রিজওয়ান (৫১ বলে ৭১) যখন হার্দিককে উইকেটটা দিয়ে গেলেন, পাকিস্তান ম্যাচ থেকে প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরপর আসিফ আর খুশদিল মিলে ৪৩ রান তুলে দিলেন। তাতেই এক বল বাকি রেখে পাকিস্তান সুপার ফোর-এর প্রথম ম্যাচ জিতল পাঁচ উইকেটে। এই জয়ে এই এশিয়া কাপে ভারত-পাক স্কোরকার্ড ১-১ হয়ে গেল।
বোলিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় ফিল্ডিংও এদিন পথে বসাল। শেষমুহূর্তে অর্শদীপ আসিফের যে ক্যাচ ফেললেন, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। স্কুল ক্রিকেটেও এমন ক্যাচ পড়ে না। ‘ক্যাচ মিসেস দ্য ম্যাচ’ কথাটা অর্শদীপ যত তাড়াতাড়ি বোঝেন ভাল!
এই পাকিস্তান দলের সবথেকে ভরসার জায়গা বাবর আজম। এদিন বিষ্ণোই যখন তাঁকে তুলে নিলেন, দুবাইয়ের গ্যালারির অর্ধেকটা থম মেরে গেল। পাকিস্তান ২২, বাবর ১৪। ছবিটা এরকমই হওয়ার কথা। বাবরের তিন ইনিংসে রান ১০, ৯ ও ১৪।
আরও পড়ুন-ক্লিনচিট পেলেন কুণাল ঘোষ: পুলিশের প্রস্তাবিত প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ খারিজ হল আদালতে
কিন্তু ম্যাচটা তারপরও ভারতের দিকে এল না রিজওয়ান ও নওয়াজের (৪২) জন্য। তিনে আসা ফখর জামানকে (১৫) তাড়াতাড়ি তুলে নিয়েছিলেন চাহাল। এরপর রিজওয়ান আর নওয়াজ ম্যাচটা নিজেদের দিকে নিয়ে গেলেন।
বুমরা চোটের জন্য এশিয়া কাপে নেই। ভুবির সঙ্গে নতুন বলে শুরু করলেন হার্দিক। এই শুরুটাই ভাল হয়নি। বারবার তাই শামির নাম উঠল। যাঁকে টি-২০ দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। এই ম্যাচ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ভারতীয় বোলিংয়ে অনভিজ্ঞতা রয়েছে। অর্শদীপ খারাপ বল করেননি। কিন্তু তাঁর বলে সেই কামড়টা ছিল না।
আরও পড়ুন-বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়াল
এর আগের ঘটনা। পাঁচ ওভারে বিনা উইকেটে পঞ্চাশ তুলে দেওয়া মানে যে কোনও দলের কাছে ‘গ্রেট গোয়িং’। ভারতের শুরুটা সেরকমই হল। অবিশ্বাস্য মেজাজে শুরু করেছিলেন রোহিত আর রাহুল। নাসিম শাহ এত মার খেলেন যে দুই ওভারে ২৫ রান দেওয়ার পর বাবর তাঁকে তুলে নিলেন। পরে আবার এলেন। চার ওভারে ৪৫ রান দিয়ে গেলেন। ২০ ওভারে ভারতের ১৮১/৭-এর পিছনে নাসিমের ওভারের বড় অবদান থাকল। তবু ১০ ওভারে ৯৩ তুলে ফেলার পর রানটা কিছুটা কমই হল।
আরও পড়ুন-শিক্ষক দিবস উপলক্ষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপ। তার আগে ফ্যাভ থ্রি-কে রানে ফিরতে হবে। রবিবারের ম্যাচ সেই ইঙ্গিত দেয় গেল। রোহিত আর রাহুল দু’জনেই ২৮ রান করে গেলেন। বিরাট (৬০) আরও একটা বিরাট-সুলভ ইনিংস খেললেন। আইপিএল বা ইংল্যান্ড সফরে যাওয়া বিরাটের সঙ্গে এই বিরাটের কোনও মিল নেই। গোটা ইনিংসে ছত্রে ছত্রে এটা লেখা থাকল, আমি ফিরে এসেছি। তার থেকেও বড় কথা হল, কিং কোহলির ব্যাট থেকে সেই ট্রেডমার্ক ‘ইনসাইড আউট’ও বেরিয়ে এল। গোটা ইনিংসে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটলেন। ঠিক আগের মতোই।
আরও পড়ুন-পুলিশের ম্যারাথন দৌড়
বাবর আগে ভারতকে ব্যাট করতে দিয়েছিলেন। আর রোহিতকে দেখে মনে হল তিনি এরই অপেক্ষায় ছিলেন। ১৬ বলে ২৮ রান। তিনটি চার, দুটি ছক্কা। রাহুলের ২০ বলে ২৮। একটি চার, দুটি ছক্কা। দুবাইয়ের এই উইকেট প্রথম ম্যাচে সবুজ ছিল। সিমাররা তাতে ছড়ি ঘুরিয়েছেন। কিন্তু মরুদেশের গরমে ঘাস শুকিয়ে গিয়েছে। সিমারদের অ্যাডভান্টেজ আপাতত উধাও। নাসিম-হাসনাইনদের তাই সাদামাটা দেখাল। বরং মহম্মদ নওয়াজ আর সাদাব খানের স্পিন ভারতীয় ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল। জাদেজার বদলে হার্দিক এই ম্যাচে ফিরেছেন। এদিন কার্তিক আর আবেশকেও বসতে হল। এলেন হুডা ও অর্শদীপ। হার্দিক ১০ বল খেলে কোনও রান করতে পারেননি। হুডা ও পন্থ করেছেন ১৬ এবং ১৪ রান। ওরা আরও কিছু রান করলে ম্যাচটা থাকত।