সংবাদদাতা, বাঁকুড়া : আর মাত্র কটা দিন বাকি। দেবী দুর্গার আরাধনায় মনপ্রাণ ঢেলে দেবে বাঙালি। লাগবে ১০৮ পদ্মফুল (Lotus)। আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে এবার সেই পদ্মে (Lotus) ঘাটতি হতে পারে বলে আগাম আভাস দিলেন বাঁকুড়ার দুই পদ্মচাষি রামপদ দাস ও গৌরাঙ্গ পাল। ওন্দা র কল্যাণী গ্রাম থেকে রামপদ বা ভাঙাবাঁধ গ্রাম থেকে গৌরাঙ্গ ভোর হলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ৫ থেকে ২৫ কিমি পর্যন্ত দৌড়ন পুকুর থেকে পদ্ম সংগ্রহে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্ম সংগ্রহের পর সেই ফুল নিয়ে ১৫/২০ কিমি দূরের বাঁকুড়া শহরে এসে নিজেরাই বসে যান ফুটপাথে ফুল বিক্রি করতে। বছরভর নানা রকমের ফুল থাকলেও এই মরশুমে গুরুত্ব পায় পদ্মই। ৬/৮টি পুকুর লিজ নেওয়া আছে দুজনেরই এর জন্য। তবে অনেক ক্ষেত্রে মাছের জন্য পদ্মগাছকে নষ্ট করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না মালিক। পাশাপাশি অবৈজ্ঞানিকভাবে পুকুর সংস্কার পদ্মচাষ শেষ করে দিচ্ছে। সপ্তাহের দু-তিন দিন বিশেষ বারে পদ্মের সামান্য চাহিদা থাকলেও দুর্গাপুজোয় চাহিদা শতগুণ বাড়ে। তাই পুজোর বেশ কিছু দিন আগে থেকেই পদ্মকুঁড়ি সংরক্ষণ করতে হয়। এ সময় রাজ্য-দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে পদ্ম পাড়ি দেয় বিদেশে। আমিরশাহি, লন্ডন, কানাডা, দুবাই, আমেরিকাও। রামপদ বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পারিবারিক ব্যবসা বলে কোনওরকমে চালিয়ে যাচ্ছি। এখন পদ্মচাষে আর লাভ নেই। বরং পরিশ্রম বেশি। এছাড়া প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা, পুকুর সংস্কার পদ্মচাষ শেষ করে দিচ্ছে। তাই কম ফুল নিয়ে বাঁকুড়ায় এসে বিক্রি করে বাইকের পেট্রোল খরচ ওঠে না।’ গৌরাঙ্গ জানান, ‘স্থানীয় পুকুরগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে নগরায়নের কারণে। ফলে আয়ের তুলনায় পরিশ্রম বেশি। আগামী দিনে বিকল্প কাজের কথা ভাবতে হবে।’