প্রতিবেদন : জোশীমঠের (NTPC Go Back) চলতি পরিস্থিতির জন্য উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের ব্যর্থতাকে অনেকেই দায়ী করেছেন। দু’দিন আগে ইসরো একটি উপগ্রহচিত্র প্রকাশ করেছিল। প্রকাশিত ছবিতে দেখা গিয়েছিল যে, শেষ ১২ দিনে জোশীমঠ প্রায় ৫.৪ সেন্টিমিটার বসে গিয়েছে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইসরো তাদের ওয়েবসাইট থেকে ওই ছবি ও তথ্য তুলে নিয়েছে। এ ঘটনায় বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপি সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করতেই ইসরোকে দিয়ে ওই ছবি ও তথ্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার জোশীমঠের ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দিতে সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। ইসরো তাদের ওয়েবসাইট থেকে কেন ওই উপগ্রহ চিত্র এবং তথ্য সরিয়ে নিয়েছে সে ব্যাপারে অবশ্য কোনও মন্তব্য করেনি।
জোশীমঠের চলতি পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা এনটিপিসির (NTPC Go Back) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। যদিও এনটিপিসির দাবি, এই ধসের জন্য তারা দায়ী নয়। কিন্তু এই দাবি মানতে রাজি নয় এলাকার বাসিন্দারা। তাই এলাকার সমস্ত দোকানপাট, হোটেল, রেস্তোরাঁ, এমনকী রাস্তাঘাটেও এনটিপিসি গো ব্যাক পোস্টার লাগানো হয়েছে। জোশীমঠে আপাতত সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি প্রশাসনের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও মানুষের ক্ষোভ কমেনি। স্থানীয় বাসিন্দারা চলতি পরিস্থিতির জন্য এনটিপিসির কার্যকলাপকেই দায়ী করছেন। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ বাড়ি ছেড়েছেন। অনেকেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেও নিকটবর্তী কোনও এলাকায় তাঁবুর মধ্যে রাত কাটাচ্ছেন। প্রবল ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টির মধ্যে গৃহহীন এই সমস্ত মানুষকে চরম দুর্দশায় রাত কাটাতে হচ্ছে। স্থানীয় বিজেপি সরকার দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তাঁদের ক্ষোভের আগুন নেভাতে পারছে না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিজেপিকে এর চরম মাশুল গুনতে হবে। বিজেপিও বিষয়টি ইতিমধ্যেই টের পেয়েছে। যে কারণে তারা তাদের ব্যর্থতাকে আড়াল করতে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন-ভারততীর্থ গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান করলেন ৫১ লাখ
ইতিমধ্যেই এক বিশেষজ্ঞ কমিটি জোশীমঠের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। ওই কমিটি তার প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছে, ২ জানুয়ারি রাতে জয়োপি কলোনি এলাকায় যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল তার ফলে ওই অংশের মাটির নিচে বেশ কিছুটা ফাঁপা অংশ তৈরি হয়ে থাকতে পারে। তার ফলেই জোশীমঠে ধস আরও দ্রুত বেড়েছে। এই মুহূর্তে ওই প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করা কার্যত অসম্ভব।
জোশীমঠের পাশাপাশি হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার সেরাজ উপত্যকার তিনটি গ্রামে বেশকিছু বাড়িতে ফটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, কিরাতপুর-মানালি জাতীয় সড়ক তৈরির সময় একাধিক জায়গায় সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছিল। ঘটানো হয়েছিল বিস্ফোরণ। তার ফলেই বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে।