প্রতিবেদন : বিজেপির বিরুদ্ধে ক্রমশ সংঘবদ্ধ হচ্ছে দক্ষিণ ভারত। অবিজেপি রাজ্যগুলির প্রতি বঞ্চনার নীতি নিয়েছে মোদি সরকার। বাংলায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে দিনকয়েক আগেই ধরনায় বসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া যন্তরমন্তরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধরনা দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এবার বাংলার দেখানো পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণের তিন রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে বিক্ষোভ দেখাতে পরপর ধরনায় বসছেন তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিধায়করা। এই দলে আছে কর্নাটক, কেরল ও তামিলনাড়ু। এই তিন অবিজেপি শাসিত রাজ্যের প্রতিনিধিরা বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন লোকসভা নির্বাচনের আগেই।
আরও পড়ুন-মৎস্যজীবীদের জন্য সমুদ্রসাথী প্রকল্প
বুধবারই দিল্লির যন্তরমন্তরে ধরনায় বসেছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ও উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। ছিলেন কর্নাটকের বহু নেতা-মন্ত্রীও। তাঁদের দাবি, ইচ্ছা করে রাজ্যের বকেয়া আটকে রেখেছে কেন্দ্র। দক্ষিণ ভারতের মানুষ যেহেতু বিজেপিকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাতে দাক্ষিণাত্যকে বঞ্চনার নীতি নিয়েছে কেন্দ্র। তাছাড়া জিএসটি সংগ্রহে নিজেদের প্রাপ্য মিলছে না বলেও দাবি রাজ্যগুলির। প্রতিবেশী কর্নাটকের মতোই একই পথে হাঁটছে কেরল ও তামিলনাড়ু। কেরলের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারকে ঘুরপথে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করছে কেন্দ্র। কেরল থেকে জিএসটি বাবদ যে অর্থ আদায় করেছে মোদি সরকার, তার মাত্র ১ শতাংশ ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, যৌথ প্রকল্পে গত অর্থবর্ষে কেরলের জন্য ৩০ হাজার কোটি বরাদ্দ করলেও চলতি বছরে তা কমিয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছ থেকে বিজয়ন সরকারের কয়েকশো কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বারবার সরকারের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে, দফতরের মন্ত্রীরা দিল্লিতে এসে দরবার করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের টনক নড়েনি। সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার যন্তরমন্তরে ধরনায় বসেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরা। যেভাবে যন্তরমন্তরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সব মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের ধরনায় বসতে নির্দেশ দেন, ঠিক সেই পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও। সংসদ ভবনে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনা শুরু করবেন ডিএমকে সাংসদরা। দিল্লিতে তাঁদের এই ধরনায় যোগ দেবেন ডিএমকের শরিক দলের জনপ্রতিনিধিরাও। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি, কেন্দ্রের কাছ থেকে দাবি আদায়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই হাঁটছে অন্য রাজ্যগুলিও।