কারার ওই লৌহকপাট ভেঙে ফেলার ২৮

Must read

২৮ অগাস্ট দিনটা নিছক ক্যালেন্ডারের একটা দিন নয়। তাই, ২৮-এর আবেগে আপন বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে ছাত্রযুবদের তমিস্রা-ঘোচানো মশাল হয়ে জ্বলে ওঠার ডাক দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সুদীপ রাহা

২১ মানে মাথা নত না করা। এ একুশও মাথা নত করেনি। বাংলার মাটি গর্জে উঠেছে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরুদ্ধে, রুখে দাঁড়িয়েছে বিভাজনের বিরুদ্ধে। মানুষের আশীর্বাদ-দোয়াকে পাথেয় করে অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে তৃতীয়বার নবান্নে পৌঁছে গেছেন জনগণমন অধিনায়িকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দেশের রোদ্দুর এসে পড়েছে বাংলার মাটিতে। দেশের মানচিত্রে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে বাংলার শান্তি-সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের মাটি। বাংলার মেয়ের দিকে তাকিয়ে আজ মুক্তির স্বপ্ন দেখছে দেশ। সাগর থেকে কন্যাকুমারিকায় জনরোল উঠে গেছে— ‘‘মেয়েটা পারবে’’।

পারলে তিনিই পারবেন। যেমন পেরেছেন অতীতেও। ছাত্র রাজনীতির আঙিনা থেকে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর আন্দোলনের পথে হেঁটে এই মেয়েটাই বাংলার মুখে হাসি ফুটিয়েছে এক দশক আগে। এই দশ বছরে বদলে গেছে বাংলা। কন্যাশ্রীর হাসি, উৎকর্ষ বাংলার আলো পৌঁছে গেছে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে। সবুজসাথীর প্রগতির চাকায় ভর করে বাংলার শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেছে বুক ভরা আশা নিয়ে। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেই সুশাসক বাংলার নিজের মেয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য চালু করেছেন ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’— গোটা দেশ ভাবছে এও সম্ভব! হ্যাঁ, মাতঙ্গিনীর মাটির মেয়ে চমকে দিয়েছে দেশকে। তাঁকে ঘিরে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখছে দেশের ছাত্র সমাজ। এ বছরের ২৮ অগাস্ট তাই শুধু তাৎপর্যপূর্ণই নয়, ঐতিহাসিকও। এ ২৮ শপথের মশালে আঁধার ঘোচানোর আগুন জ্বালাবে, ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আশায় বুক বাঁধার বার্তা পৌঁছে দেবে তরুণের স্বপ্নে।
কুসুমকুমারী দাশ লিখেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’’। আজ কাজে বড় হয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলার আর এক ছেলে, যার সুচিন্তিত পদক্ষেপ, সাংগঠনিক দৃঢ়তা একা হাতে ম্যাচ জেতানোর নজির গড়েছে ইতিমধ্যেই। বাংলার ছাত্রসমাজ শুধু নয় গোটা দেশের যুব সম্প্রদায় দেখেছে চোয়াল শক্ত করে লড়াইয়ের অভিষেক। যাঁর তীক্ষ্ণ যুক্তির সামনে দাঁড়াতে না পেরে কার্যত মানে মানে কেটে পড়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীও! অনেকের ঈর্ষাই আজ সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের পথ আরও সুগম করেছে। আগামীর এই দেশ বাঁচানোর লড়াইয়েও তাঁর দেখানো পথ ধরেই ছাত্র-যুবরা দেশনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের ময়দানে জনস্রোত হয়ে নামবে।

এ ২৮, আমাদের পথ নির্ধারণের। এ ২৮, জাতি-ধর্ম ভুলে কারার ওই লৌহকপাট ভেঙে দেশকে উদ্ধার করার অঙ্গীকার করার। এ ২৮ অগাস্ট আমাদের আবেগ। এ আবেগ আগুনেরই সমার্থক। আমাদের বুকের আপন পাঁজর জ্বালিয়ে নিয়ে মশাল হয়ে জ্বলতে হবে— ‘‘আঁধার রজনী ভয় কি জননী, আমরা বাঁচাবো এ মহাদেশ’’।

Latest article