শান্তিতেই শেষ হয়েছে পুরভোট। জেতার সম্ভাবনা নেই বুঝতে পেরে সকাল থেকেই কয়েকটি জায়গায় বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, বহিরাগতদের নিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে বিরোধীরা। বিক্ষিপ্ত এই গোলমাল নিয়ন্ত্রণ কড়া হাতে করে রাজ্য পুলিশ। এদিকে, পুরভোট নিয়ে রিপোর্ট জানতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে সোমবার, বেলা ১০টায় তলব করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagadeep Dhankar)। এদিকে, ভোটে ভরাডুবি বুঝতে পেরেই সন্ত্রাসের অজুহাতে তুলে সপ্তাহে কাজের শুরুর দিনই ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিল বিজেপি (BJP)।
২২৭৬ ওয়ার্ড, ১১২৮০ বুথের ভোটগ্রহণে অভিযোগ মাত্র হাতে গোনা। শতাংশের হিসেবে দশমিক ৪। তৃণমূল (Trinamool Congress) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে এই ভোট পরিচালিত হয়েছে। কয়েকটি বুথে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে বিরোধীরা। কিন্তু তাও শতাংশের হিসেবে দশমিক চারের মধ্যে। এর মধ্যে বিভিন্ন বুথে ইভিএম ভাঙার মতো নিন্দনীয় কাজ করেছে বাম-বিজেপি।
পুরভোটে প্রচারের সময়ই লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস (Left-Congress)-বিজেপি। একসময়ে গেরুয়া ঝড়ের দাবি তোলা বিজেপির প্রচার সভাতেও জনসমাগম ছিল হাতে গোনা। পায়ের তলায় জমি নেই বুঝতে পেরেই ভোটের দিন অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে বিরোধীরা। বিশেষ করে এলাকা দখলে রাখতে গিয়ে বারবার হিংসা ছড়িয়েছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি।
যে ভাটপাড়াকে নিজের গড় বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh), সেখানেই বহিরাগত নিয়ে গিয়ে অশান্তি সৃষ্টির করেন তিনি। এমনকী, পুলিশকে ধাক্কাও দেন। পাল্টা স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পালিয়ে মুখ বাঁচতে হয় তাঁকে। পূর্ব মেদিনীপুরে পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে বুঝতে পেরেই, অশান্তি করে ভোট লুঠের চেষ্টা করেন অধিকারীদের অনুগামীরা।
একই ছবি মুর্শিদাবাদে। সেখানে টিমটিম করে জ্বলতে থাকা সংসদীয় এলাকা ধরে রাখতে সকাল থেকে বুথে বুথে ঘুরে বেড়ান কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhirranjan Chowdhuri)। বেশ কিছুক্ষণের জন্য তিনি বুথ জ্যাম করেন বলেও অভিযোগ। ধুলিয়ানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আক্রন্ত হয় পুলিশ। ইটের আঘাতে চোখে চোট লাগে এক পুলিশকর্মীর। ডালখোলায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করা হয়।
বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত হন তৃণমূলের (Trinamool Congress) কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের মারধরের অভিযোগও ওঠে। কিন্তু দায়িত্বশীল শাসকদলের ভূমিকা পালন করে কখনও আইন হাতে তুলে নেয়নি। পুরভোটের সকাল থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে যা অভিযোগ জমা পড়েছে তার নিরিখে প্রত্যেক জেলা থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলেই পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।