হাওড়ায় (Howrah) রামনবমীর মিছিলে অশান্তির অভিযোগ আসায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন তিনি। ধর্নার দ্বিতীয় দিনে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, রুট (Route) বদলে অনুমতি না নিয়ে অস্ত্র এমনকী বুলডোজার নিয়ে মিছিল করা হয়। তার জেরেই অশান্তি ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন-রামনবমীতেই মন্দিরের ভিতরে এক কুয়ো ধসে মৃত ১১
মুখ্যমন্ত্রী কথায়, “ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে অশান্তি ও প্ররোচনা ছড়াচ্ছে। অপরাধ করলে আমরা কোনও ধর্ম দেখব না। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কড়া পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।“ হাওড়ায় পরিকল্পনা করে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন মমতা। “বারবার অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। একদিকে অন্নপূর্ণা পুজো চলছে, অন্যদিকে রমজান মাস চলছে। সেই সময় রাজ্যে অশান্তি ও প্ররোচনের সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি (BJP)।“ মমতার কথায়, কোনও মিছিলের নিষেধ করা হয়নি। কিন্তু বলা হয়েছিল শান্তি বজায় রেখে মিছিল করতে। কিন্তু হাওয়ায় আচমকা রামনবমীর শোভাযাত্রার রুট আচমকা বদল করা হয়। এবিষয়ে পুলিশের অনুমতি ছিল না বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “তোমাকে মিছিল করতে কেউ বাধা দেয়নি। তোমায় তলোয়ার, বুলডোজার নিয়ে মিছিল করার অধিকার কে দিয়েছে? ওরা বুলডোজার ব্যবহার করেছে। জবাব তোমায় দেব। তোমার রুট পরিবর্তন করলে কেন? তুমি আন-অথোরাইজড রুটে গিয়েছ। ইচ্ছা করে একটি কমিউনিটিকে ধাক্কা দেওয়ার জন্য, হামলা করার জন্য। হামলা করে কেউ ভাবো মামলা করে রেহাই পাবে! হামলাই করো, মামলাই করো, জনতার আদালতে টিকবে না ফন্দি।“
আরও পড়ুন-রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আদায়ে এবার ‘দিল্লি চলো’: ধর্না মঞ্চ থেকে ডাক মুখ্যমন্ত্রীর
মমতার অভিযোগ, ইচ্ছে করে পার্কসার্কাস, চোপড়া এলাকায় এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর অপচেষ্টা হয়। “টাকা দিয়ে প্ররোচনা ছড়ানো হচ্ছে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কোন ধর্ম দেখা হবে না। টাকার খেলা বন্ধ করা হবে।“
এদিন ধর্নার শেষে মমতা জানান, “সাতবার এমপি হয়েছি। তিনবার বিধানসভায় জিতেছি। অনেকবার মন্ত্রী হয়েছি। আমি খুব সেনসেটিভ। রাস্তা দিয়ে যখন যাতায়াত করি সবদিক নজর রাখি। বাইরে থেকে যারা আসেন বলেন সেই কলকাতাকে আর চেনা যায় না। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে। সিপিএমের আমলে তো এমন কিছু গড়ে তোলা হয়নি।“
আরও পড়ুন-ধর্না মঞ্চেই তৃণমূলে যোগ দিলেন অভিনেতা তরুণ কুমারের নাতি সৌরভ
ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মমতা। ব্যাখ্যা দেন কেন এই ধর্নার। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলা স্বার্থে কথা বলেছি বারবার। বারবার চিঠি লিখেছি, দিল্লি গিয়েছি। ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে দিয়েছে। গরিব মানুষ কাজ করেছে, তাদের টাকা দেওয়া হয়নি। নিজেদের দাবি আদায় করে নিয়ে আসতে হয় কীভাবে আমরা জানি। ভদ্রতা মেইনটেইন করছি। এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা দিল্লি গিয়ে বলে আসছেন ১০০ দিনের টাকা দেবেন না, আবাস যোজনার টাকা দেবেন না। এবার আমরা দিল্লি যাত্রা করলে তাহলে বুঝবে। আটকে দিলে যেখানে আটকাবে সেখানেই বসবো। সামলাতে পারবে তো?“
আরও পড়ুন-কলকাতায় শীঘ্রই নতুন অফিস চালু করছে ইনফোসিস
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “দেশে অপশাসন চলছে। গণতন্ত্র নেই। বিচার ব্যবস্থার ওপর চার দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ভোটার লিস্টে নাম কেটে দেওয়া হচ্ছে। এনআরসি নাম করে নাম কেটে দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন রাজ্যের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হোক। আর তা না দিলে কেন্দ্রীয় সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।“