গণনা কেন্দ্রে সাতসকালেই হাজির ভবানীপুর উপনির্বাচনে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম প্রধান সেনাপতি ফিরহাদ হাকিম। শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলে তখন লাইন দিয়ে ঢুকছেন কাউন্টিং এজেন্টরা। দুটি ডোজের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট অথবা আরটিপিসিআর টেস্টর রিপোর্ট দেখিয়ে ভিতরে ঢুকতে হচ্ছে। পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরাও নিজেদের ডিউটি বুঝে নিচ্ছেন কর্তাদের কাছ থেকে। এই সময় চলল একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়। গণনা কেন্দ্রের বাইরে তখন এক এক করে এসে পৌঁছচ্ছেন ভবানীপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাস, বিজপির টিব্রেওয়ালরা। চোখ পড়তেই সৌজন্য বিনিময় হল দুই বিরোধী প্রার্থীর সঙ্গে। ফিরহাদ হাকিম তখনই বলেদিলেন, ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হলও তাই। ভোট গণনা শেষ হতে দেখা গেল রেকর্ড ভোটে (৫৮৮৩২) জিতেছেন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন-আরও চার আসনে উপনির্বাচন, ভবানীপুরে জয়ের পরেই তিন কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
অন্যদিকে কালীঘাটে নেত্রীর বাড়ির সামনে সকাল বেলাতেই শুরু হয়ে গিয়েছিল উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা। সকাল ৮ থেকে গণনা শুরু হয়। প্রথমেই পোস্টাল ব্যালট। এগিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৯টার কিছু পর থেকে শুরু হয় ইভিএম গণনা। মোট ২১ রাউন্ড। প্রথম রাউন্ডেই দলনেত্রী মনতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকশো ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন খবর পাওয়া মাত্রই শুরু হল খেলা হবে গানের সঙ্গে তুমুল নাচ। শুরুটা করলেন মহিলারাই। সেখানে নবীন প্রবীন সব প্রজন্মই হাজির৷ সঙ্গে উড়তে লাগল দেদার সবুজ আবির।
বেলা যত গড়াল ভিড় বাড়তেই লাগল। সঙ্গে জোড়া ফুলের দলীয় পতাকায় ঢেকে গেল ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের সামনের বড় রাস্তা। এক একটা রাউন্ড গণনার শেষে নেত্রীর ভোট বাড়ার খবর আসছে সঙ্গে সঙ্গেই দ্বিগুন উৎসাহে চলল সবুজ আবির খেলা আর নাচ।
একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উল্টো দিকে ৮৩নং ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি হোর্ডিং লাগিয়ে দেওয়া হল। তাতে লেখা, মোদীশাহসুরমোর্দিনী। যা দেখে গগনচুম্বি আওয়াজে জয়ধ্বনি উঠল দলনেত্রীর নামে।
আরও পড়ুন-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে টুইট তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের
তার ঠিক পরেই পটুয়া পাড়ার সামনে নিজের অফিস-বাড়ি থেকে বেরোলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে এসে ঢুকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। তাঁকে দেখতে পেয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা আরও বাড়ল। এর মধ্যেই সেখানে এসে উপস্থিত হলেন ভবানীপুরের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষেরা। ঢোলের সঙ্গে সবুজ আবির উড়িয়ে চলল তুমুল নাচ আর স্লোগান। দিনভর এই উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনায় মেতে রইল কালীঘাট-ভবানীপুর। আর নজর রাখল গোটা বাংলা ও পুরো ভারতবর্ষ। দলনেত্রী তো আগেই বলেছিলেন, বি ফর ভবানীপুর বি ফর ভারতবর্ষ। এখান থেকেই শুরু হল ভারতের জয়যাত্রা।