প্রতিবেদন : নিতান্তই ক্রেতা- বিক্রেতার মধ্যেকার গন্ডগোল কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে দাঙ্গার চক্রান্ত করা হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারে। ঘটনাটি রবিবার রাতের। তবে অত্যন্ত কড়া হাতে পুলিশ গোটা বিষয়টি হ্যান্ডেল করেছে। তিনজন চক্রান্তকারীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বিজেপি তাদের স্বভাবমতো এর মধ্যে ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতায়। কালীপুজো- দীপাবলির উৎসবের মাঝে এক বড় ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে এই চক্রান্তের ঘটনা। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তিনজন ধরা পড়েছে। এরা হল, প্রহ্লাদ সর্দার, প্রতাপ সর্দার ও পুষ্পেন্দু বেরা। তাদের জেরা করে জানা গিয়েছে , এই ঘটনার পিছনে রয়েছে কালীমূর্তি পছন্দ না হওয়া নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ঝামেলা। এর সঙ্গে কোনও ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। ধৃতরা সে কথা কবুলও করেছে জেরায়।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে। ডায়মন্ড হারবারের রামনগর থানা এলাকার নুরপুর পঞ্চায়েতের মুকুন্দপুর গ্রামে। এখানেই ঠাকুর তৈরির ওয়ার্কশপ রয়েছে প্রহ্লাদদের। দুর্গাপ্রতিমার পর কালীপ্রতিমাও তৈরি করে প্রহ্লাদরা। সোমবার কালীপুজো ছিল। রবিবার রাতে পুজো কমিটির লোকজন ঠাকুর নিতে আসেন। তখনই গন্ডগোল হয়। প্রহ্লাদরা স্বীকার করেছে, কমিটির বরাতমতো প্রতিমা গড়তে পারেনি তারা। তাই কমিটির লোকজন ঠাকুর নিতে অস্বীকার করে। এরপর অশান্তি তৈরি করে সহানুভূতি আদায়ের জন্য প্রহ্লাদরা নিজেরাই অবিক্রিত বেশ কিছু প্রতিমা ভেঙে ফেলে। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ভাঙচুরের সেই খবর বিজেপির তরফে জেলাজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। যার জেরে সাময়িকভাবে উত্তেজনাও তৈরি হয়। রাস্তা অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটে। তবে ঘটনার গতিপ্রকৃতি দেখে পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ জাগে। তদন্তে নেমে চক্রান্তের আসল চিত্রনাট্য খুঁজে পায়। জানা যায়, এখানে ধর্মীয় কোনও বিষয় নেই। সবটাই স্থানীয় সমস্যা। যার পিছনে রয়েছে বরাত অনুযায়ী প্রতিমা তৈরি করতে না পারা নিয়ে গন্ডগোল।
আরও পড়ুন-বিশ্বে হোয়াটসঅ্যাপ বিপর্যয়
ষড়যন্ত্রের জাল এতটাই গভীরে ডালপালা ছড়িয়েছিল যে প্রতিমা ভাঙার প্রায় একডজন ছবি এবং প্রেস রিলিজের মতো করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, কালীপুজোর আগে গোষ্ঠী উত্তেজনা তৈরি করা। গোটা ঘটনার পিছনে গেরুয়াবাহিনী তথা আরএসএস-এর হাত রয়েছে বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পর্যবেক্ষণ, উত্তেজনা ছড়িয়ে রাজ্য সরকারের বদনাম করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই এই ঘৃণ্য চক্রান্তের জাল বোনা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক তৎপরতায় তা এড়ানো গিয়েছে।