বইমেলা, রবীন্দ্র সদন চত্বরে দেখা মিলত তাঁর। শ্যামলা রঙ, শীর্ণ চেহারা। ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন নাট্যপত্র। নিরীহ সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ। কণ্ঠ নামিয়ে অনুরোধ করতেন, একটা কিনবেন?
বেশিরভাগ শিক্ষিত মানুষ ফিরিয়ে দিতেন তাঁকে। এড়িয়ে যেতেন। দুর্ব্যবহারের পাল্টা দিতেন না। পরে দেখা হলে আবার সকরুণ অনুরোধ নিয়ে সামনে দাঁড়াতেন এবং যথারীতি প্রত্যাখ্যাত হতেন।
আরও পড়ুন-বাঁধাই কর্মী
বিচিত্র পেশা। একটা সময় অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মডেল হিসেবে বসতেন আর্ট কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সামনে। হত সামান্য লক্ষ্মীলাভ। পাশাপাশি নাট্যপত্র ফেরি। কলকাতা বইমেলায়, রবীন্দ্র সদন চত্বরে।
আরও পড়ুন-সাহিত্যের ফেরিওয়ালা
যাতায়াত করতেন মেট্রোয়। অভাব ছিল সংসারে। তবু অন্য পেশা বেছে নেননি। বইমেলায় গেলে আচমকা মনে পড়ে তাঁর মুখ। যদিও এখন আর দেখা মেলে না তাঁর। কয়েক বছর আগে নাট্যপত্র ফেরি করে রাতে বাড়ি ফেরার পথে মেট্রো দুর্ঘটনায় মারা যান। জলজ্যান্ত মানুষটি হয়ে যান রক্তপিণ্ড।
যতদিন ছিলেন অনেকেই নাম জানতেন না। মৃত্যুর পরেই সকলে জেনেছেন তিনি সজল কাঞ্জিলাল। অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এর সামনে আছে একটি ভাস্কর্য। সেই ভাস্কর্যে লেগে রয়েছে নিরীহ মানুষটির মুখের আদল। তিনিও ছিলেন বইমেলার বন্ধু।