প্রতিবেদন : করোনার জেরে কলকাতা পুলিসের আয় কমেছে। সম্প্রতি কলকাতা ট্রাফিকের পুলিশের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট থেকেই এই তথ্য জানা গিয়েছে। ট্রাফিক আইনভঙ্গকারীদের থেকে জরিমানা বাবদ যে টাকা আয় হয়, তার ভিত্তিতেই এক হিসেবে দেখা গিয়েছে, ২০২০ সালে এই খাতে জরিমানা থেকে যে টাকা আদায় করা গিয়েছিল, তা এক ধাক্কায় কমেছে ৩৬ কোটি টাকা। চলতি বছরেও এই খাতে আদায়ের পরিমাণ আশাজনক নয়।
আরও পড়ুন : করোনা স্বস্তি, দেড় মাসে ৩৬ হাজার বিয়ে
২০১৫ সাল থেকে সবচেয়ে কম জরিমানা আদায় হয়েছে এই করোনা কালেই, লকডাউনের কারণে৷ । গত বছর মাত্র ২৬ কোটি ৯৮ লক্ষ ২৭ হাজার ২১৮ টাকা আদায় হয়েছে। যেখানে ২০১৯ সালে আদায় হয়েছিল ৬৩ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত আদায় হয়েছে মাত্র সাড়ে ১৪ কোটি টাকার মতো। গত বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত গোটা দেশেই সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল। সেই সময় জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য কোনও গাড়ির রাস্তায় নামা কার্যত নিষিদ্ধ ছিল। ১ জুন থেকে ধাপে ধাপে শুরু হয় ‘আনলক’ প্রক্রিয়া। স্বাভাবিকভাবেই ২০২০ সালের মার্চের পর শহরে যানবাহন চলেছে কম। আর তারই ধাক্কা লেগেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের জরিমানা আদায়ে। ট্রাফিক পুলিসের বক্তব্য, করোনার জেরে দেশজুড়ে বেকারত্ব, আর্থিক মন্দার কথা মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মানবিক ভূমিকা নিয়েছিল। তাই গত বছর কলকাতা শহরে ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের থেকে জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশ অনেকটাই সংযত ভূমিকা পালন করেছিল। বিশেষ করে, নির্ধারিত রাস্তার পরিবর্তে অন্য রাস্তায় ঢুকলেও সাইকেল আরোহীর জরিমানা না করে সতর্ক করেই ছেড়ে দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) বলেছেন, গত বছর করোনা ও লকডাউনের সময় বিধিনিষেধের জেরে স্বাভাবিক যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। স্বভাবতই জরিমানা আদায়ের পরিমাণও হ্রাস পেয়েছে। পুলিশের হিসেব বলছে, ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি জরিমানা আদায় করেছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। ওই বছর ৬৩ কোটি টাকা জরিমানা বাবদ আয় করেছিল৷ কারণ, দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থাকা জরিমানা আদায় করতে ২০১৯ সালে কলকাতা ট্রাফিক পুলিস এককালীন বিশেষ ছাড় বা ওয়েভার স্কিমের কথা ঘোষণা করেছিল। তবে লকডাউনের জেরে কলকাতা পুলিশের রাজস্ব আদায় ধাক্কা খেলেও তার কিছু সুফল মিলেছে। পাশাপাশি লকডাউনের প্রথম পর্বের পর অন্য এক সমীক্ষা করে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ। সেখানে ধরা পড়েছে ওই সময়ে কলকাতা শহরে পথ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা এক ধাক্কায় প্রায় ৮৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল।