দিল্লিতে (Delhi Air Pollution) দূষণ কমল সামান্য। দূষণের মাত্রা কমতেই কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের তরফে নিয়মবিধি কিছুটা শিথিল করা হল। মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে চার স্তরীয় অ্যাকশন প্ল্যান গ্রহণ করেছিল বাতাসের গুণমান নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রীয় প্যানেল। সেই বিধিনিষেধই এবার সামান্য শিথিল করা হল। দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ‘বিপদজনক’ থেকে ‘অত্যন্ত খারাপ’ পর্যায়ে নেমে দাঁড়াল। একটি সমীক্ষা বলছে, এই বায়ুদূষণ সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভুগছে দিল্লির ৮০ শতাংশ পরিবার। রাজধানীর বাসিন্দারা কেউ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। কেউ আবার চোখ জ্বালা, মাথা যন্ত্রণার মতো শারীরিক সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হচ্ছেন। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, দিল্লির বাতাস ক্রমশ হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী।
রবিবার কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের তরফে জারি করা নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে,আজ থেকে দিল্লিতে পুনরায় ট্রাক প্রবেশ করতে পারবে। ভারত স্টেজ ৬ বা বিএস ৬ ডিজেল চালিত গাড়ির চলাচলের উপরে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। বাতাসের গুণমান নিয়ন্ত্রক প্যানেলের তরফে চিঠিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দিল্লির বাতাসের গুণমান ৩৩৯, যা চতুর্থ স্তরের বিধিনিষেধ জারির জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার থেকে ১১১ পয়েন্ট কম। এছাড়া আবহাওয়া দফতর সূত্রেও বাতাসে দূষণের পরিমাণ বাড়ার কোনও পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। এই কারণে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। তবে দিল্লির বাতাসের গুণমান উন্নত করতে ও দূষণ প্রতিরোধে যে পদক্ষেপগুলি করা হয়েছে ও বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, তা এখনও জারি থাকবে।
আরও পড়ুন-বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পই ভরসা নির্লজ্জ গেরুয়া শিবিরের
সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে (Delhi Air Pollution) বসবাসকারী ওই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যে দূষণজনিত অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছেন। ২২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের এক বা একাধিক সদস্যকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে দূষণজনিত শারীরিক সমস্যা নিয়ে।অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি এবং চোখ জ্বালার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শ্বাস নিতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন মানুষ। এ ছাড়াও, মাথাব্যথা, ঘুম না হওয়া, কোনও কাজে মন দিতে না পারা কিংবা অনাবশ্যক অস্থিরতার মতো উপসর্গেও ভুগছেন কেউ কেউ।
বাতাসের গুণমানের সূচক ৩৫১ থেকে ৫০০ এর মধ্যে থাকলে বাতাসের মান ‘ভয়াবহ’ বলা হয়। ৫০০ ছাড়িয়ে গেলে তা হয়ে ওঠে ‘অতি ভয়াবহ’। গুণমানের এই সূচকটি নির্ভর করে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫)-এর উপরে। কার্যত কোনও অঞ্চলে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতির হারই সেই অঞ্চলের বাতাসের গুণমানের সূচক। ফুসফুসের ক্ষেত্রেও সব থেকে বিপজ্জনক এই অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই দিল্লির বাতাসে যা ঊর্ধ্বমুখী।