বিদেশ বোস: ৬৭৪৭ দিন পর ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে প্রথম একাদশের বাইরে রেখেও বিশ্বকাপের নক আউট পর্বের ম্যাচ হেলায় জিতল পর্তুগাল। সুইজারল্যান্ডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে বিশ্বকাপের শেষ আটে জায়গা করে নিল ইউসেবিওর দেশ। সৌজন্যে রোনাল্ডোর জায়গায় খেলতে নামা ২১ বছরের তরুণ তুর্কি গঞ্জালো রামোস। পর্তুগালের জার্সি গায়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে হ্যাটট্রিক করে নায়ক। বিশ্বের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচে হ্যাটট্রিক-হিরো। নতুন তারার জন্ম দেখল বিশ্ব ফুটবল।
আরও পড়ুন-সংহতি দিবসে রাম-বাম জোটকে তুলোধোনা করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব
পর্তুগাল ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ম্যাচটা অনেক আগ্রহ নিয়ে দেখতে বসেছিলাম। কিন্তু প্রথম একাদশে রোনাল্ডোকে না দেখে বেশ অবাকই হয়েছিলাম। মনে হল, দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে ওকে তুলে নেওয়ার পর কোচের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল বলেই হয়তো শেষ ষোলোর গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে প্রথম এগারোয় রাখেননি ফের্নান্দো স্যান্টস। ভাবছিলাম, বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টের নক আউট ম্যাচে রোনাল্ডোর মতো তারকাকে বেঞ্চে রেখে মাঠে নামার মাশুল গুনতে হবে না তো পর্তুগালকে? ভুল ভাঙল ৩৭ বছরের সিআর সেভেনের জায়গায় এদিন মাঠে নামা রামোসকে দেখে। দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলল। অথচ একবারের জন্যও মনে হয়নি কোনও রকম চাপে আছে। খেলার ১৭ মিনিটেই অসাধারণ গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দিয়েছে ২১ বছরের ছেলেটি। গোলটা দেখে আমি মুগ্ধ। ডান পায়ে বল রিসিভ করে শরীর বাঁকিয়ে বাঁ-পায়ে জোরাল শটে প্রথম পোস্টে টপ নেটে বল রেখেছে। প্রথম পোস্টে থেকেও সুইস গোলরক্ষক সোমেরের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না।
আরও পড়ুন-রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটাচ্ছে বিজেপি : নেত্রী
সুইজারল্যান্ডের রক্ষণ এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা। কিন্তু পর্তুগিজ আক্রমণের সামনে দিশেহারা দেখিয়েছে তাদের রক্ষণভাগকে। তার মধ্যেই প্রথমার্ধে জারদান শাকিরির ফ্রি-কিক থেকে গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল সুইজারল্যান্ড। কিন্তু পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়েগো কোস্তা বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে শাকিরির ফ্রি-কিক বাঁচায়। ৩৩ মিনিটে গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করে পর্তুগাল। কর্নার থেকে শক্তিশালী হেডে গোল করে গেল ৩৯ বছরের পেপে। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের ম্যাচে সবথেকে বেশি বয়সে গোল করার নজির গড়ল পর্তুগিজ ডিফেন্ডার।
আরও পড়ুন-রাজ্যের উদ্যোগে আজ থেকে ঝাড়গ্রামে সাঁওতালি বইমেলা
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পর্তুগালকে আরও ধারাল দেখিয়েছে। সুইস ডিফেন্স ভেঙে চুরমার। ৫১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে রামোস। পর্তুগালের তৃতীয় গোল। দিয়েগো দালাতের ক্রস থেকে বাঁ-পায়ের টোকায় গোলরক্ষকের পায়ের তলা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেয় ম্যাচের নায়ক। মিনিট চারেকের মধ্যে পর্তুগালের চার নম্বর গোল। এবার গোল রাফায়েল গুয়েরেরোর। চার গোলে পিছিয়ে পড়ে ৫৮ মিনিটে একটি গোল শোধ করে সুইজারল্যান্ড। কর্নার থেকে গোল আকানজির। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। একতরফা ম্যাচে ৬৭ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে পঞ্চম গোলও করে ফেলে পর্তুগাল। নিজের তৃতীয় গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে রামোস। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক করে উচ্ছ্বাসে ভাসল বেনফিকার তরুণ ফরোয়ার্ড। ৭৪ মিনিটে হ্যাটট্রিক-হিরো রামোসকে তুলে রোনাল্ডোকে নামান কোচ স্যান্টস। অফসাইডের কারণে তার একটি গোল বাতিল হল। বিশ্বকাপের নক আউটে রোনাল্ডোর গোলের অপেক্ষা আরও বাড়ল। তবে শেষ লগ্নে আরও এক গোল করে সুইসদের লজ্জা বাড়াল পর্তুগাল। ডান পায়ের কোনাকুনি শটে ষষ্ঠ গোলটি করে রাফায়েল লিয়াও।