জ্যোতির্বেত্তা

‘শরীর ঠান্ডা করতে হলে/পান্তাভাত গরমকালে’। প্রবল তাপে জেরবার বাঙালিকে মুক্তির পথ বাতলেছিলেন সে-যুগের খনা। আবার ২০২৪-এ গোটা বিশ্ব জুড়ে জলবায়ু আর তাপমাত্রার ব্যাপক পরিবর্তনের আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এ-যুগের বাবা ভাঙ্গা। একদিকে সহস্রাধিক বচনের রূপকার খনা অন্যদিকে অমোঘ ভবিষ্যৎ-দ্রষ্টা বাবা ভাঙ্গা। বহু বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের ঊর্ধ্বে, মানা এবং না মানার তর্কের বাইরে অলৌকিক ক্ষমতাধারী এই নারীরা আসলে কে? কেন আজও তাঁরা প্রাসঙ্গিক? লিখলেন শর্মিষ্ঠা ঘোষ চক্রবর্তী

Must read

রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজসভার বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহ। যাঁর মুখের কথা, গণনা একেবারে নির্ভুল। আজ তিনি একটু বিরক্ত। স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন পুত্রবধূ খনার দিকে।
ধীর গলায় বললেন, এ-ধরনের রসিকতার কারণ কী? এই আচরণ তাঁর কাছে একেবারেই প্রত্যাশিত নয়। একটু চুপ থেকে খনা বললেন, ‘বাবা পিঁপড়েদের চলাচল দেখে আমি বুঝতে পেরেছি খানিক পরেই উত্তাল ঝড় উঠবে’। এবার প্রচণ্ড রাগে চিৎকার করে বরাহ বললেন, ‘এইসব অসভ্যতা তুমি তোমার জঙ্গলে রেখে এসো। সিংহল দেশের মেয়ের থেকে আমি আর কীই বা প্রত্যাশা করতে পারি! সরে যাও আমার পথ থেকে’।
সরে দাঁড়ালেন খনা। খানিক দূরে দাঁড়িয়ে মিহির সব শুনতে পাচ্ছিল কিন্তু একটা কথাও তাঁর মুখ থেকে বেরল না। এ বাড়ির কর্তার মুখের ওপর কেউ কথা বলে না। ঠিক-ভুলের বিচারক একমাত্র বরাহ। খনা মাঝে মাঝে ভাবে মিহির তো তার সঙ্গেই বড় হয়েছে। তারা তো এক নদীতে শ্যাওলার স্রোত পেরিয়ে মাছ ধরেছে। প্রবল ঝড়ে পাখিদের বাসা আর ডিম বাঁচিয়েছে। মিহিরও বোঝে সন্ধে নামার পর কেমন করে পাখিরা কথা বলে। কিন্তু তাঁর স্বামী বদলে গেছে। মিহির এখন পিতার সঙ্গে নানান আঁক কষে আর পুঁথি পড়ে।

আরও পড়ুন-৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই চাই ভোটের চূড়ান্ত হার: সুপ্রিম কোর্ট

এদিকে খানিকটা পথ পেরিয়ে আসার পরেই বরাহ টের পেলেন খনার কথা কতটা সত্যি হতে চলেছে। দিনের আকাশে কালো মেঘ, ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। ধরিত্রী এমন করে উন্মাদ হয়নি আগে। সমস্ত মেঘমালা যেন হিংস্র পাহাড়ি ঝরনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে বরাহর উপর। ভাগ্যিস পথের মধ্যে একটা অতিথিশালা দেখতে পেলেন বরাহ। প্রকৃতির এই অশান্ত রূপ দেখতে ভালবাসে খনা। সিংহল দেশে ঝড়ের রাতেই কতবার অভিসারে বেরিয়েছে মিহির আর খনা।
সেদিন খানিক সিক্ত বসনেই বিক্রমাদিত্যে রাজসভায় পৌঁছেছিলেন বরাহ। খনাকে নিয়ে এমন কত গল্প রয়েছে।

আরও পড়ুন-‘বিজেপির মিথ্যাচারের বেলুন চুপসে গিয়েছে’ ভার্চুয়াল সভায় তোপ অভিষেকের

কে এই খনা যার বচন এমন অব্যর্থ ছিল!
পূর্ণ হতে শূন্য ভাল
যদি ভরতে যায়,
আগে হতে পিছে ভাল
যদি ডাকে মায় ।
**
মঙ্গলে উষা বুধে পা
যথা ইচ্ছা তথা যা৷
**
যদি বর্ষে মাঘের শেষ
ধন্যি রাজা পুণ্যি দেশ।
**
খুব চেনা আর কানে শোনা এই কথাগুলো আমাদের রোজকার জীবনের অপরিহার্য অঙ্গ। কৃষিপ্রধান ভারতবর্ষের বিরাট একটা অংশ জুড়ে এই সব মধুর বচন আদি অনন্ত কাল থেকে লোকমুখে প্রচলিত। এগুলো খনার বচন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়, হাতগণনা, শস্যগণনা, বন্যা, বৃষ্টি, জন্ম-মৃত্যু গণনা, শুভ-অশুভ গণনা— প্রতিটা ক্ষেত্রে খনার বচন ছিল নির্ভুল।
কে এই খনা
মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেকার সময়টা খনার যুগ। রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজসভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহের ছেলে মিহির ছিলেন খনার স্বামী। খনা এবং মিহির দুজনেই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন।
বরাহ এবং তাঁর পুত্র মিহির একবার আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়লে, খনা সেই সমস্যার সমাধান করেন। তাঁর দেওয়া পূর্বাভাসে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হত বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে তাঁর নবরত্নসভার দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। কিন্তু রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় বরাহের আদেশে মিহির খনার জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্যু হয়। খনার মৃত্যু হলেও তাঁর বলে যাওয়া কথা ধ্রুবসত্যের মতো আজও উজ্জ্বল। এমন ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করতেন, যা হুবহু ফলে যেত। বাঙালি লোকসংস্কৃতিতে আজও অমৃতবাণীর মতো খনার বচনের প্রচলন রয়েছে।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

কেন আজও প্রাসঙ্গিক খনা
প্রাচীন বাংলার মেরুদণ্ড ছিল কৃষি। অভিজাত সুশিক্ষিত মানুষেরা কৃষিকাজ করতেন। কৃষিসম্পদ ছিল তাঁদের অহংকারের বিষয়। ঔপনিবেশিক শাসনের সময় সেই কৃষি মর্যাদা হারায়। এর প্রমাণ রয়েছে কৃষিভিত্তিক সমাজ নিয়ে লেখা খনার বচনেই—
‘ধান ধন বড়ো ধন, আর ধন গাই। সোনারূপা কিছু কিছু আর সব ছাই।’
অর্থাৎ ধান ও গাভীই বড় সম্পদ, তুলনায় সোনারুপোও নগণ্য। কত যুগ আগে এক প্রাচীন নারীর পক্ষে কৃষিকাজে কীভাবে এতখানি প্রজ্ঞা রাখা সম্ভবপর হয়েছিল ভাবতে একটু অবাকই লাগে!
এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, খনা হচ্ছেন সেই সময়কার জ্যোতির্বিদ যখন বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক কৃষির সূত্রপাতই হয়নি। ফসলবিন্যাস অন্যরকম ছিল। ধান ও কলা ছিল অন্যতম প্রধান শস্য, ব্যাপক আকারে হত কার্পাসচাষ। খনার একটি বচনই অতীতের সেই সুদিন মনে করিয়ে দেয়—
‘শতেক ধেনু হাজার কলা।
কী করবে আকাল শালা।’
এতে ধারণা করা যায় একজন গৃহস্থের তখনকার দিনে একশো গাভী (ধেনু) ও হাজার কলাগাছ থাকাও অসম্ভব ছিল না। খাজনা দিয়ে কৃষক অপরিমেয় জমি চাষ করতে পারতেন। খনার এমন সহস্রাধিক বচন এখনও টিকে রয়েছে। কাব্যগুণ ছাড়াও প্রায়োগিক প্রয়োজনে মানুষ এগুলোকে মনে রেখেছে। (এরপর ২০ পাতায়)

আরও পড়ুন-গোধরা-পুলওয়ামার কথা শুনেছি দেখলাম সন্দেশখালি : অভিষেক

শুধু বাংলা নয়, অসম থেকে কেরল পর্যন্ত— ভারত মহাদেশের পূর্বে অর্থাৎ অসম, বিহার ও ওড়িশাতে এত দীর্ঘকাল ধরে বিস্তৃত জায়গা জুড়ে খনার মতো আর কারও বচন এত জনপ্রিয় নয়।
প্রশ্ন হল, যখন আধুনিক কৃষিজ্ঞানের প্রসার ছিল না তখন কৃষকরা এসব থেকে উপকৃত হয়েছেন কিন্তু এযুগেও কী খনার এই বচন এতটা প্রাসঙ্গিক? তাহলে বলি কৃষি, উদ্যান ও পশুবিদদের মতে খনার বচনের অধিকাংশই যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক।
‘নারিকেল গাছে দিলে লুনে মাটি।
শীঘ্র শীঘ্র বাঁধে গুটি।’
অর্থাৎ নারিকেল গাছের গোড়ায় নোনা মাটির প্রয়োগ সুফলন দেয় অথবা
‘ফাগুনে আগুন চৈতে মাটি।
বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।’
অর্থাৎ ফাল্গুন মাসে বাঁশের ঝাড়ে শুষ্ক ঝরাপাতা পুড়িয়ে চৈত্র মাসে মাটি চাপা দিলে বাঁশ তাড়াতাড়ি বাড়ে। অদ্ভুতভাবেই এসব কিছুর সঙ্গেই আধুনিক বিশেষজ্ঞরাও কিন্তু সহমত।
শুধু কৃষিক্ষেত্রে নয়, বিবাহতত্ত্ব, স্বপ্নতত্ত্ব, তিলতত্ত্ব, যাত্রা, দিকতত্ত্ব— সর্বত্র ছিল খনার অবাধ বিচরণ। যেমন যাত্রা নিয়ে খনার একটা প্রচলিত বচন হল—
‘বারবেলা কালবেলা দুয়ে পরিহরি।
করিবেক শুভযাত্রা স্মরিয়া শ্রীহরি।’
সেকালে কোন নারীর মুখের কথা যে এতটা অব্যর্থ হতে পারে এবং কালক্রমে তা এ-যুগেও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে সেটা বিশ্বাস করতে একটু সময় লাগলেও সেই বিশ্বাস অবিশ্বাসের ঊর্ধ্বে, মানা এবং না-মানার তর্কের বাইরে খনা আজও ভীষণভাবেই প্রাসঙ্গিক।
অনাহূত ভবিষ্যৎকে জানবার আগ্রহ নেই এমন মানুষ কমই আছেন। তাই সেই প্রাচীন যুগ থেকে জ্যোতির্বিদ্যা ভাগ্যগণনা ইত্যাদির রমরমা। বিপদ-আপদ সমস্যা, রোগ-ভোগ মুক্তি, ধন-সম্পত্তি, বিয়ে, সংসার ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুর জন্য মানুষ ছুটেছে তাঁদের কাছে। তাই খনারা হারিয়ে যায় না বরং সেই প্রাসঙ্গিকতার ধারাকে বহন করে এগিয়ে চলে। তৈরি করে নতুন উত্তরসূরি। যেমন বাবা ভাঙ্গা। বুলগেরিয়ার অন্ধ, রহস্যময় এই মহিলা এক নির্ভুল ভবিষ্যৎদ্রষ্টা। খনার বচন আর বাবা ভাঙ্গার অন্ধচোখের ভবিষ্যদ্বাণী দুটোকেই ফলতে দেখেছে মানুষ। সে-যুগের খনা আর এ-যুগের বাবা ভাঙ্গার মাঝে শুধু কয়েক হাজার বছরের তফাত।
কে এই বাবা ভাঙ্গা
বাবা ভাঙ্গা যাঁর দিব্যদৃষ্টি দিয়ে দেখা ভবিষ্যদ্বাণীর প্রায় ৮৫ শতাংশই এখনও পর্যন্ত মিলে গেছে। ১৯১১ সালে বুলগেরিয়াতে ভ্যাঙ্গেলিয়া পান্ডেভা দিমিত্রোভার জন্ম৷ এক রহস্যময়ী নারী ছিলেন এই দিমিত্রোভা। জন্ম থেকেই অনেক শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার নামকরণ করা হয়নি। বুলগেরিয়ান লোকপ্রথা হল যে, কোনও শিশুর মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তার নাম রাখা হত না। যখন শিশুটির দু-মাস বয়স হল, ক্রমশ স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে শুরু করে। তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা দেখে একজন অপরিচিত পথিক তার নাম দেন ভাঙ্গেলিয়া। ভাঙ্গেলিয়ার শৈশব খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। ১৯২৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ভাঙ্গেলিয়ার জীবনকে চিরকালের মতো বদলে দেয়। এক ভয়ঙ্কর ঝড়ে হারিয়ে যায় সে এবং পরের দিন সকালে আবর্জনার স্তূপের মধ্যে গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। তখন তার চোখ মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। এই জীবন-পরিবর্তনকারী ঘটনার পর ভাঙ্গা দাবি করেছিলেন তিনি চেতনা হারানোর আগে কেউ তাঁকে স্পর্শ করেছিল। এই সময় থেকেই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হন এবং শুরু হয় তাঁর ভবিষ্যৎ-দর্শন৷
বাবা ভাঙ্গার সেই ভবিষ্যৎ-দৃষ্টি অমোঘ। এক-আধ বছর বা পাঁচ-দশ বছর নয় তিনি মৃত্যুর আগে ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন। যার অনেকগুলোই এখনও পর্যন্ত মিলে গেছে।
ওই সময় বাবা ভাঙ্গার কথা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বুলগেরিয়ার এক প্রভাবশালী পার্টির বেশ কয়েকজন নেতার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষকে সেসব তথ্য ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে জানিয়ে বিভ্রান্ত করেন। যদিও কোনওকিছুর প্রমাণ মেলেনি।

আরও পড়ুন-গোধরা-পুলওয়ামার কথা শুনেছি দেখলাম সন্দেশখালি : অভিষেক

খোলা চোখে যা দেখা গেছে তা হল প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর দিনক্ষণ মিলিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷
মিলিয়ে দিয়েছিলেন ৯/১১-এ নিউ ইয়র্কে সন্ত্রাসবাদী হামলা৷ এমনকী, চেরনোবিল বিপর্যয়ের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও যা বলেছিলেন, অলৌকিকভাবে মিলে গিয়েছিল সব৷ আবার তাঁর অনেক ভবিষ্যদ্বাণী মেলেওনি। তিনি বলেছিলেন, কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট, অর্থাৎ ওবামাই হবেন শেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু এ-কথাটি ভুল। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করারই কথা নয়। রয়েছে এমন আরও কত কিছু। তা হলে? বাবা ভাঙ্গা কি আসলে একজন অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন নারী এবং ভবিষ্যৎ-দ্রষ্টা? এই প্রশ্নাতীত বিষয়গুলো যদি সরিয়ে দেখি, তিনি সত্যি খুব জনপ্রিয় হয়েছিলেন। ২০২৪-এর বেশ কিছু ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন বাবা ভাঙ্গা। গোটা বিশ্বের কাছে যা রহস্য। কতটা মেলে আর কতটা নয় সেটাই দেখার অপেক্ষা।

আরও পড়ুন-অভিজিতের নির্দেশ খারিজ, ৩৯২৯ পদে প্রাথমিকে নিয়োগ

বাবা ভাঙ্গার কিছু ভবিষ্যদ্বাণী ২০২৪-এ
২০২৪-এর প্রথম দিকে একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ব্যাপক জলবায়ু এবং তাপমাত্রার পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। খানিক মিলে গেছে সেই ভবিষ্যদ্বাণী। বিশ্ব জুড়ে ৪০ বছরের তুলনায় তাপমাত্রায় রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে এই বছর।
তিনি বলেছেন ২০২৪ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপরে প্রাণঘাতী হামলা চালাবে রাশিয়ার জনৈক ব্যক্তি৷
এ-বছর নাকি পৃথিবী তার কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। এর ফলে দেখা দিতে পারে সৌরঝড়ও। যাতে মারাত্মক ক্ষতি হবে প্রাণিজগতে। ধ্বংসও হয়ে যেতে পারে একাধিক দেশ।
২০২৪ সালে সাইবার হানা অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগুলিতে সাইবার হানা চলবে। এই ভবিষ্যদ্বাণীও মিলেছে।
এ-বছর বিশ্ব জুড়ে চলবে আর্থিক সঙ্কট। বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিতে বড় পরিবর্তন আসবে। অনেক দেশের ঘাড়েই ঋণের বোঝা বাড়বে।
এই বছর ইউরোপে সন্ত্রাসবাদী হামলা বাড়বে। কোনও একটি শক্তিধর দেশ বায়োলজিক্যাল ওয়েপন বা জৈবাস্ত্রও পরীক্ষা করতে পারে।
বাবা ভাঙ্গা বলে গেছেন ৫০৭৯ সালে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবী। এমন আরও বহু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তিনি যা শুনলে গায়ে কাঁটা দেয়।

আরও পড়ুন-শুভমন-সুদর্শনে গুজরাটের জয়

খনার বচন
আষাঢ়ে পনেরো শ্রাবণে পুরো
ধান লাগাও যত পারো।
তিন শাওনে পান
এক আশ্বিনে ধান।
পটল বুনলে ফাগুনে
ফলন বাড়ে দ্বিগুণে।
ভাদ্রের চারি, আশ্বিনের চারি
কলাই করি যত পারি।
লাঙ্গলে না খুঁড়লে মাটি,
মই না দিলে পরিপাটি
ফসল হয় না কান্নাকাটি।
সবলা গরু সুজন পুত
রাখতে পারে খেতের জুত।
গরু-জরু-ক্ষেত-পুতা
চাষীর বেটার মূল সুতা।
সবল গরু, গভীর চাষ
তাতে পুরে চাষার আশ।
শোন শোন চাষি ভাই
সার না দিলে ফসল নাই।
হালে নড়বড়, দুধে পানি
লক্ষ্মী বলে চললাম আমি।
রোদে ধান, ছায়ায় পান।
ষোলো চাষে মূলা, তার অর্ধেক তুলা
তার অর্ধেক ধান, তার অর্ধেক পান,
খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।

Latest article