প্রতিবেদন : রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ ও তৎপরতায় কয়েক বছর ধরেই কলকাতার রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হয়। সেই বর্ণাঢ্য ও রঙদার শোভাযাত্রায় কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ও নামী পুজো কমিটি তাদের প্রতিমা-সহ যোগ দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উপস্থিত থাকেন রেড রোডের পুজো কার্নিভালে। থাকেন রাজ্যের মন্ত্রী ও প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি বহু বিশিষ্ট মানুষ। আজ, শনিবার কলকাতার সেই মূল পুজো কার্নিভাল শুরু হবে বিকেলে। তার আগে শুক্রবার রাজ্যের প্রতিটি জেলায় অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হল পুজো কার্নিভাল।
আরও পড়ুন-বলি থেকে টলি বয়কট ট্রেন্ডে নাকাল সবাই
এ বছর বাংলার দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর তরফে কালচারাল হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ায় জেলায় জেলায় প্রথম কার্নিভালের আয়োজন হয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। জেলাগুলির এই কার্নিভাল নিয়ে গোটা বাংলা জুড়ে পাড়ায় পাড়ায় ক’দিন ধরেই চোখে পড়ে আট থেকে আশি, নারী-পুরুষের মধ্যে রীতিমতো উৎসাহ-উদ্দীপনার ছবি। প্রস্তুতিপর্ব থেকেই দেখা যায় কার্নিভাল নিয়ে জেলাবাসীর আগ্রহ, উত্তেজনা। শুক্রবার বিকেলের পর প্রতিটি জেলার সদর শহর কার্নিভালের স্পর্শে হয়ে উঠল রঙিন ক্যানভাস। প্রশাসন মনোনীত পুজো কমিটিগুলি তাদের মাতৃপ্রতিমা নিয়ে সোৎসাহে যোগ দেয় এই কার্নিভালে। জেলার নিজস্ব ও ঐতিহ্যময় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির আবহে বাঁধা পড়ে কার্নিভালের প্রতিটি ক্যানভাস। ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এবার আনন্দের সীমা দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-মেক্সিকোতে বন্দুকবাজের হানা, মৃত মেয়র-সহ ১৮
করোনার প্রকোপে গত দু’বছর সেভাবে অনুষ্ঠান না হলেও এবার সুদে-আসলে উসুল করে নিতে মনেপ্রাণে মুখিয়ে ছিল রাজ্যের আপামর জনসাধারণ। তাই শনিবার কলকাতার রেড রোডের অনুষ্ঠানের আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ও অনুপ্রেরণায় শুক্রবার জেলায় জেলায় পুজো কার্নিভালগুলি আলাদা মাত্রা পেল।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বারাসতের শতদল মাঠ থেকে ২৪টি পুজো কমিটির প্রতিমা নিয়ে সুসজ্জিত শোভা়যাত্রা বের হয়। চাঁপাডালি মোড়ের মূল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ ও পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। রথীন ঘোষ বলেন, সবাইকে সামিল করে এই ধরনের সর্বজনীন আনন্দদায়ক ভাবনা একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই সম্ভব। পার্থ ভৌমিক বলেন, বিরোধীরা যতই দুর্গাপুজো নিয়ে অপপ্রচার করুক, বাঙালি সমাজ তা কখনওই ভাল চোখে নেবে না।
আরও পড়ুন-থাইল্যান্ডের ক্রেশে বন্দুক হামলায় ২৩ শিশু-সহ নিহত ৩৪
তাই উৎসবের আমেজ বাংলার পাশাপাশি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে সমাদৃত হচ্ছে। শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ ছৌনাচ ও সৃজনশীল নৃত্যের মাধ্যমে বারাসতের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর জেলার বিখ্যাত মহিলা ঢাকিরা তাঁদের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। তারপর শুরু হয় প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা। অনুষ্ঠান দেখতে উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। সকাল থেকেই কঠোর নিরাপত্তায় মোড়া ছিল শহর। জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী ও পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ময়দানে নেমে তদারকির কাজ করেন। শুক্রবার বিকেলে বহরমপুর ওয়াইএমসিএ মাঠে মুর্শিদাবাদ জেলার কার্নিভাল শুরু হয়। কার্নিভাল ঘিরে ব্যানারে সেজে ওঠে মাঠের চারপাশ। শহরের বিখ্যাত পুজোগুলো অংশ নেয় শোভাযাত্রায়। বাঁকুড়ায় পুজো কার্নিভালের প্রস্তুতি চলে সারাদিন। সন্ধ্যায় শুরু হয় শোভাযাত্রা। পুরুলিয়া জেলার কার্নিভালে ১৩টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করে। শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে ভিড়ে ঠাসা মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রদর্শিত হয়।