বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) অনুষ্ঠানে আজ গঙ্গা আরতির পরিকল্পনা নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন নিজের বক্তব্যের মধ্যেই আউটরাম ঘাট থেকে পুণ্যার্থীদের শুভেচ্ছা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-গুরুগ্রামে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডের জেরে পুড়ে ছাই কমপক্ষে ৫০টি ঝুপড়ি
এদিন তিনি বলেন, ‘প্ল্যানিং না নিয়ে কিছু না করলে জল ও আগুনের বিপদ থাকে। কলকাতায় সন্ধেয় গঙ্গা আরতি করার ব্যবস্থা করা হবে। পুরো পরিকল্পনা সেরে এ বিষয়ে এগোতে হবে। বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় গঙ্গা আরতি করতে চেয়েছিলাম। কাল বিবেকানন্দের জন্মদিনে গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি শুরু হবে আর প্রস্তুতি শেষ হলেই গঙ্গা আরতি হবে। এরপর চাইব দক্ষিণেশ্বর ও বেলুড়েও গঙ্গা আরতি করতে।
আরও পড়ুন-পাকিস্তানে পেঁয়াজ ২৫০, আটা ১৬০, রান্নার গ্যাস ১০ হাজার টাকা
এদিন গঙ্গাসাগরের সঙ্গে কুম্ভ মেলার তুলনা করে তিনি বলেন, কুম্ভ মেলা জাতীয় ফান্ড পায়, কিন্তু গঙ্গাসাাগর মেলা পায় না। গঙ্গাসাগরে গিয়ে দেখুন কত কাজ করেছে রাজ্য। গঙ্গাসাগর মেলার পরিকাঠামো বাড়িয়েছে রাজ্য। কুম্ভ মেলার জায়গাগুলি রেলপথে সংযুক্ত, গঙ্গাসাগরের সঙ্গে কোনও রেল বা বাসের যোগাযোগ নেই। কেউ কেউ সমালোচনা করে দায় সারেন। অনেকে ফেক নিউজ ছড়ানোর চেষ্টা করছে, সতর্ক থাকুন।’
এছাড়া তিনি বলেন, ‘বন্দে ভারতে এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া ক্ষেত্রেও ঠিক এমন হয়েছে। প্রথমে বাংলাকে এর জন্য দায় করা হয়। তারপর তদন্তে বিহার থেকে বন্দে বারতে পাথর ছোড়ার কতা জানা যায়।’
আরও পড়ুন-মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, খাদে পড়ে মৃত্যু ৩ ভারতীয় সেনা জওয়ানের
বুধবার গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আউট্রাম ঘাটের অনুষ্ঠানে গঙ্গারতির পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলার উন্নয়নের বিষয়টিও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, “আগেই তুলনায় বর্তমানে গঙ্গাসাগরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গঙ্গা সাগরে এখন হেস্টহাউস তৈরি হয়েছে, সরকার ১২০০ বায়ো টয়লেট তৈরি করেছে। আমরা এখানে হোগলার ঘর বানিয়েছি ১০ লক্ষের বেশি, যাতে বাইরের মানুষ এসে থাকতে পারে।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আগে মেলার আসার জন্য ট্যাক্স দিতে হত, আমরা সেটা তুলে দিয়েছি। মেলায় যারা আসছেন তাঁদের সঙ্গে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ লক্ষ টাকার বিমা করে দিয়েছি আমরা।” পাশাপাশি কুম্ভ মেলার উদাহরণ টেনে এবং এই মেলাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কুম্ভ জাতীয় মেলা। সেখানকার যাবতীয় খরচ করে কেন্দ্র। কুম্ভ রেলের সঙ্গে যুক্ত, গঙ্গাসাগর নয়। গঙ্গাসাগরে প্রত্যেককে ৪-৫ ঘণ্টা জল পেরিয়ে যেতে হয়। একসঙ্গে তো ৪-৫ লক্ষ মানুষ ভেসেলে যেতে পারে না। এত ভেসেলের ব্যবস্থাও করা যায় না। তবে প্রশাসন পুলিশ সর্বশক্তি দিয়ে তীর্থযাত্রীদের সাহায্য করে এখানে। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ও এনজিওরা যথেষ্ট ভালো কাজ করছে তীর্থযাত্রীদের সাহায্যে। পাশাপাশি কোনও রকম সমস্যা হলে, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড রয়েছে। জায়গায় জায়গায় স্বাস্থ্য শিবির বানিয়েছি আমরা।”
আরও পড়ুন-মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, খাদে পড়ে মৃত্যু ৩ ভারতীয় সেনা জওয়ানের
এছাড়াও যে কোনও রকম গুজব ঠেকাতে সংবাদমাধ্যম ও তীর্থযাত্রীদের সহযোগিতার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “সংবাদমাধ্যমকে বলব টিআরপি বাড়ানোর জন্য এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষ সমস্যায় পড়েন। সম্প্রতি বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার ঘটনায় গুজব ছড়ানো হয়েছিল। এটা বিহারে হয়েছিল, বাংলায় নয়।” এছাড়াও তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কিছু কিছু সময় মেলায় গুজব ছড়ানো হয়, মানুষ আতঙ্কিত হয়। এঁদের বিশ্বাস করবেন না। সরকার মাইকে ঘোষণা করে সেগুলো শুনবেন। অন্যের কথা শুনে আতঙ্কিত হবেন না।”