আরও বড় আঘাতের প্রস্তুতি?

এদিকে ইতিমধ্যেই গোটা ইউরোপ জুড়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র হচ্ছে। এমনকী, রাশিয়াতেও পুতিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়ে চলছে।

Must read

প্রতিবেদন : রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলা যুদ্ধের দশম দিনে সরকারিভাবে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল রাশিয়া। এদিন ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে রাশিয়া। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনে বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েক হাজার নাগরিক আটকে রয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে আটকে পড়েছেন ইউক্রেনের বহু সাধারণ মানুষ। আটকে থাকা এই সমস্ত মানুষ যাতে দ্রুত এবং নিরাপদে ইউক্রেনের যুদ্ধাঞ্চল ছাড়তে পারেন তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আরও পড়ুন-রুশ হামলায় ইউক্রেনবাসীর মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে ন্যাটো, তোপ জেলেনস্কির

ইতিমধ্যেই রুশ হামলায় অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এই তথ্য রুশ সরকার লাগাতার অস্বীকার করলেও তাদের উপর আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে। সাধারণ মানুষের জীবনহানি হওয়ায় বিশ্বজুড়ে নিন্দিত হচ্ছে পুতিনের দেশ। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাই এখন মুখরক্ষার স্বার্থে তাদের এই ঘোষণা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। পাশাপাশি সাময়িক বিরতির পর রাশিয়া আরও ব্যাপক, আগ্রাসী ও ধ্বংসাত্মক আক্রমণের পথে হাঁটবে বলেও তাঁদের অনুমান। বৃহস্পতিবার বেলারুশে দুই দেশ দ্বিতীয় দফার শান্তি আলোচনায় বসেছিল। যদিও দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠকও কার্যত নিষ্ফলা। তবে ওই বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন দু’দেশই সাধারণ বা নিরীহ মানুষের উপর আক্রমণ না চালানোর বিষয়ে সহমত হয়। সে কারণেই এদিন এই সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করে রাশিয়া।

আরও পড়ুন-টলিউড অভিনেত্রীকে বিজেপির কুৎসা

ভিনদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি ইউক্রেনের সাধারণ মানুষও যাতে সেদেশের যুদ্ধাঞ্চল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন সেজন্য মারিউপোল, ভলনোভোখা দিয়ে মানব করিডর গঠন করেছে রাশিয়া। সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে গিয়ে ক্রেমলিন জানিয়েছে, আপাতত ইউক্রেনের এই দুই শহরের উপর তারা কোনওরকম হামলা চালাবে না। তবে রাজধানী কিয়েভ সহ অন্যত্র হামলা অব্যাহত আছে। কিয়েভকে পুরোপুরি দখলে আনতে মরিয়া রুশ সেনারা।

আরও পড়ুন-মাধ্যমিকে নকল বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্য সরকার

এদিকে ইতিমধ্যেই গোটা ইউরোপ জুড়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরও তীব্র হচ্ছে। এমনকী, রাশিয়াতেও পুতিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়ে চলছে। সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধ করতেই পুতিন ইতিমধ্যেই ফেসবুক, ট্যুইটার-সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়াকে নিষিদ্ধ করেছেন। পুতিন প্রশাসনের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় যুদ্ধ নিয়ে অহেতুক ভুয়ো খবর ও পশ্চিমি দুনিয়ার প্রোপাগান্ডা বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত। তবে রাশিয়ার এই নিষেধাজ্ঞা মানবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন স্পেস এক্সের প্রধান ইলোন মাস্ক। ইলোন জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের সামনে কোনও অবস্থাতেই তিনি মাথা নত করবেন না। সব দেশের প্রতিটি নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার আছে। রাশিয়ার নাগরিকদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। এই বিতর্কের মধ্যেই গোটা ইউরোপ জুড়ে বড় মাপের সাইবার হানার অভিযোগ উঠল রাশিয়ার বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাত থেকেই ইউরোপের একাধিক দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছেন মানুষ। একটি মার্কিন স্যাটেলাইট অপারেটর সংস্থার দাবি, রাশিয়া থেকে এই সাইবার হামলা চালানো হয়েছে।

আরও পড়ুন-এতবড় বিপর্যয়ে মাত্র দু’ঘণ্টার চিন্তন

সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও রাশিয়া নতুন উদ্যমে ইউক্রেনের উপর ঝাঁপাবে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। রাশিয়া ইতিমধ্যেই ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাপোরিঝিয়ার দখল নিয়েছে। এবার মাইকোলেভ ওব্লাস্ট শহরে ইউক্রেনের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দখল নিতে উদ্যত হয়েছে মস্কো। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে আছে রুশ সেনা। রুশ সেনা সুমি শহরে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সুমি শহরে আটকে পড়া ভারতীয়দের অকারণে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির বাইরে না আসার নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে রাশিয়ার একতরফা আগ্রাসনের মধ্যেই এবার পুতিন সরকারকে বিপাকে ফেলল সেদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সংস্থা লুকঅয়েল। এই রুশ সংস্থা বিশ্বের মোট উৎপাদিত অশোধিত তেলের দুই শতাংশ উৎপাদন করে থাকে। সংস্থায় প্রায় এক লক্ষ কর্মী রয়েছেন। শনিবার সংস্থার পক্ষ থেকে পুতিনের কাছে অবিলম্বে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানানো হয়েছে।

Latest article