পূর্ণেন্দু রায়, নয়াদিল্লি : ভোটের আগে জনগণকে বিনা পয়সায় আকর্ষণীয় নানা প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা ছোটায় রাজনৈতিক দলগুলি। বিনামূল্যে দেওয়া এরকম প্রতিশ্রুতিকে ‘গুরুতর বিষয়’ হিসাবে চিহ্নিত করল দেশের সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ক্ষুব্ধ শীর্ষ আদালত ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে। ব্যাখ্যা চেয়ে সময় দেওয়া হয়েছে চার সপ্তাহ।
আরও পড়ুন-প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তা
মঙ্গলবার বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে যোগ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না, বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হিমা কোহলি। সেখানে প্রধান বিচারপতির কড়া মন্তব্য, আমরা নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের নির্দেশের পর তারা একটি মাত্র বৈঠক করেছে। কেবলমাত্র রাজনৈতিক দলগুলির মতামত চেয়েছে। কিন্তু তার পর আদৌ কিছু হয়েছে কি না জানি না। পাঁচ রাজ্যে ভোট আসন্ন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টতই বলেছে, এধরনের প্রতিশ্রুতি ‘গুরুতর বিষয়’। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না বলেছেন, আমি জানতে চাই কীভাবে নির্বাচনী প্রচারে বিনামূল্যে উপহারের প্রতিশ্রুতি আইনগতভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? আসন্ন নির্বাচনের সময়ে কি এটি করা যেতে পারে? না হলে আগামী নির্বাচনের জন্য হতে হবে। কারণ এটি একটি গুরুতর বিষয়। বিনামূল্যের উপহার সংক্রান্ত বাজেট নিয়মিত বাজেটের ঊর্ধ্বে উঠে যায়।
আরও পড়ুন-
শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, আমরা আগে নির্বাচন কমিশনকে বিনামূল্যে উপহারের প্রতিশ্রুতি প্রতিরোধ করার জন্য নির্দেশিকা তৈরি করতে বলেছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে শুধুমাত্র একটি বৈঠক করে তাদের মতামত জানতে চেয়েই কার্যত দায় সেরেছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছিল, ভোটারদের কাছ থেকে অযথা রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলির এই ধরনের জনপ্রিয় পদক্ষেপের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত। কারণ তারা সংবিধান লঙ্ঘন করে। নির্বাচন কমিশনের উচিত উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া। এই প্রবণতা শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ টিকে থাকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি নয়, বরং সংবিধানের চেতনাকেও আঘাত করে।