প্রতিবেদন : নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় স্তরে লড়াইয়ে নেমেছেন, বাকি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় এনেছেন তাতে ভয় পেয়েছে বিজেপি। ইন্ডিয়া জোট তৈরির পর বিজেপি কেঁপে গিয়েছে। তাদের দিশাহারা অবস্থা। তার উপর বাংলার বকেয়া নিয়ে অভিষেক যেভাবে জাতীয় স্তরে প্রতিবাদ সংঘটিত করেছেন তাতে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের উপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণ শুরু করেছে তারা।
আরও পড়ুন-ক্ষমতায় এলেই কৃষকদের ঋণ মকুব হবে, ছত্তিশগড়ে প্রতিশ্রুতি রাহুলের
ইডি-সিবিআইকে দিয়ে মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের। যা কখনওই সম্ভব নয়। কোনও অশুভ ও বহিরাগত শক্তির কাছে তৃণমূল কংগ্রেস মাথা নত করবে না। স্পষ্ট বক্তব্য তৃণমূল কংগ্রেসের। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে চক্রান্তের গ্রেফতারির প্রতিবাদে শনিবার গর্জে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। জেলার প্রতিটি ব্লকে ধিক্কার মিছিল, পথসভা সংঘটিত হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের নেতৃত্বে মধ্যমগ্রামে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। ছিলেন মধ্যমগ্রামের পুরপ্রধান নিমাই ঘোষ, বারাসত সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ নন্দী সহ অন্যান্যরা। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এটা বিজেপির নোংরা রাজনৈতিক চক্রান্ত। রাজনৈতিকভাবে তৃণমূলের সঙ্গে না পেরে এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা মাথা নত করব না। আমাদের সমস্ত সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক ও তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করলেও আমাদের দুর্গা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই লড়ই করে বিজেপি নামক অসুড়কে পরাস্ত করবে। এভাবে ইডি সিবিআই দিয়ে তৃণমূলকে আটকে রাখা যাবে না। বক্তব্য অশোকনগরের বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামীর।
আরও পড়ুন-বাম-শাসিত কেরলে জনসভা হামাস নেতার!
শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসাতের চাঁপাডালি মোড় থেকে কলোনি মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মছিল হয়। শেষে কলোনি মোড়ে প্রতিবাদ সভাও হয়। নারায়ণ বলেন, আমাদের বর্ষিয়ান নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে অন্যায়ভাবে গ্রফতার করা হয়েছে। বারাসাতের মিছিলে পা মেলান, বারাসাত শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরুন ভৌমিক, উপ পুরপ্রধান তাপস দাসগুপ্ত, পুরপিতা সুনিল মুখার্জি, অভিজিৎ নাগ চৌধুরী, ডাঃ সুমিত কুমার সাহা, দেবব্রত পাল, সমির তালুকদার, সমির দত্ত, চম্পক দাস দেবাশীষ মিত্র, জেলা পরিষদের সদস্য আরশাদ উদ জামান সহ অন্যন্যরা। এদিনের মিছিলে কয়েক হাজার মানুষ পা মেলান।
আরও পড়ুন-কাতারে ৮ ভারতীয়র মৃত্যুদণ্ড: দিল্লির সামনে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ
বিধানসভার উপ মুখ্য সচেতক তথা বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কোনঠাসা বিজেপি। রাজ্যের প্রতিদিন ভাঙছে বিজেপি। তার উপর রয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। ফলে লোকসভার আগে নাজেহাল বিজেপি। এছাড়াও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ দিনের কাজ ও আবাস জোজনায় বঞ্চিতদের নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তাতে ভয় পেয়েছে বিজেপি। তার উপর রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোট। এই সবকিছু থেকে মুখ ঘোরাতেই তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হেনাস্তা করছে। পরিত্রানের পথ খূঁজে না পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে কালিমা লিপ্ত করতে চাইছে। এর উত্তর মানুষ দিয়েদেবে আগামী লোকসভা নির্বাচনে।
আরও পড়ুন-কাজাখস্তানে আগুন, মৃত্যু
বসিরহাটের সীমান্ত থেকে সুন্দরবন সর্বত্রই তৃণমূলের প্রতিবাদ ও ধিক্কার মিছিল হয়। বসিরহাটের সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের ১০টি ব্লকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে পথে নামে তৃণমূল কংগ্রেস। একদিকে বাসন্তী হাইওয়ে অন্যদিকে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ-লেবুখালী রোডে প্রতীকী অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। পাশাপাশি ঘোজাডাঙ্গায় সীমান্ত রোডে ইছামতি ব্রিজ থেকে বসিরহাট টাউন হল পর্যন্ত মিছিলে বসিরহাট তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতৃত্বরা রাস্তায় নামেন। প্রতিবাদ আন্দোলন ধিক্কার মিছিল শুরু করেন। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বাগদা, বনগাঁ, গোবরডাঙ্গা তে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা হয় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, পুরপ্রধান গোপাল শেঠ।
আরও পড়ুন-‘গাজায় শান্তি চাই’, বিক্ষোভে উত্তাল নিউইয়র্ক
এছাড়াও বনমন্ত্রীর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়াতেও প্রতিবাদ সভা ও মিছিল হয়। এদিন হাবড়াবাসী তাদের প্রিয় বিধায়কের জন্য রাস্তায় নামেন। হাবড়ার রুপকার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও প্রতিবাদ সভা থেকে আওয়াজ ওঠে। এছাড়াও দমদম-বারাকপুর সাংগঠনিক জেলার নৈহাটি, পানিহাটি, বারাকপুর, ভাটপাড়া সহ বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা হয়।
শুক্রবার থেকেই বাইপাসের পাশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। এদিন এক নেফ্রলজিস্ট ও ইউরোলজিস্ট তাঁকে পরীক্ষা করেন। আজ রবিবারও বেশ কিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা বনমন্ত্রীর। হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনে বলা হয়েছে, মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা আগের থেকে কিছুটা ভাল হলেও উদ্বেগ কমেনি। হল্টার মনিটর চলবে। ভাল ঘুমের দরকার। শনিবার সাত সকালেই এক ইডি আধিকারিক হাসপাতালে হাজির হন। চিকিৎসকদের কাছে জানতে চান মন্ত্রী কতটা চাঙ্গা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির এহেন ব্যবহারে বিস্মিত চিকিৎসকরা।