সুমন করাতি, হুগলি: গঙ্গার পশ্চিমতীরের বলাগড় গুপ্তিপাড়ায় এক সময় টোলে পড়ার জন্য বাংলার বাইরে থেকেও ছাত্ররা আসত। গুপ্তিপাড়ার পণ্ডিতসমাজে শিক্ষাদানের বিস্তার ঘটে। সেই সুবাদেই পুঁথিপত্র লেখালেখি হয়েছে বলাগড় ও জিরাটের গ্রামগুলিতে। সেই প্রাচীন পুঁথিগুলি উদ্ধার করার পর জানা গিয়েছে বৌদ্ধ সংস্কৃতির একটি ধারা জিরাট তথা বলাগড় জুড়ে ছিল। সেই ধারা বেয়েই জিরাটের মঠবাড়িতে প্রায় ৪১৩ বছর ধরে দুর্গাপুজোর পরম্পরা বজায় রয়েছে।
আরও পড়ুন-আকাশবাণীতে মহালয়া নিয়ে বিতর্ক
প্রাচীন পুঁথি থেকে জানা গিয়েছে, জিরাটের মঠবাড়িতে পাটুলি গ্রামে ছিল রাঢ়ীয় অবসতী চট্টোপাধ্যায় বংশীয়দের বাস। তাঁদেরই বংশধর মদনমোহন তর্কালঙ্কার জিরাটে এসে বসবাস করতে থাকেন। মদনমোহনের বাড়ির কাছে প্রাচীন ইটের কারুকার্যময় বৌদ্ধমঠ ছিল। সেইজন্য মদনমোহনের বাড়িকে বলা হত মঠবাড়ি। মঠটি ধ্বংস হলে ১৩০৭ বঙ্গাব্দে মদনমোহনের বংশধরেরা দালান নির্মাণ করেন। এখানে দুর্গাপুজোর মন্দিরে দুটি শ্বেতপাথরের বৌদ্ধমূর্তি রয়েছে। পুজোয় দুই হাত প্রকটে, আটটি হাত পিছনে আড়ালে রেখে গড়া হয় প্রতিমা। পিটুলির নরমূর্তি বলি দিয়ে যোগিনী পুজোর বিধি রয়েছে। মঠবাড়ির পিছন দিকে খানিকটা এগোলে ধর্মরাজ ঠাকুরের মন্দির। পূজারিরা ব্রাহ্মণ নন, বোধক সম্প্রদায়ের। মঠবাড়ির তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পুজো মহাযানী বৌদ্ধরীতিতে হয়। বাড়ির নিজস্ব ৪১৩ বছর আগের পুঁথি মেনে।’