ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও পাঞ্জাবের ডিআইজি

ভয়ঙ্কর দুর্নীতির ছায়া পাঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসনে। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল পাঞ্জাব পুলিশের পদস্থ কর্তা ডিআইজি হরচরণ সিং ভুল্লারকে।

Must read

চণ্ডীগড় : ভয়ঙ্কর দুর্নীতির ছায়া পাঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসনে। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল পাঞ্জাব পুলিশের পদস্থ কর্তা ডিআইজি হরচরণ সিং ভুল্লারকে। তাঁর অফিস এবং অন্যান্য ডেরা থেকে সিবিআই উদ্ধার করেছে প্রায় ৫ কোটি টাকা নগদ, দেড় কিলোগ্রাম সোনা, একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি এবং বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। ৮ লক্ষ টাকা না দেওয়া হলে মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছেন ভুল্লার—আকাশ বাট্টা নামে এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভুল্লারের সঙ্গে সিবিআই গ্রেফতার করেছে কৃষ্ণ ওরফে কৃশানু নামে এক ব্যক্তিকেও। এই ঘটনাই প্রমাণ করছে, দুর্নীতির শিকড় কতটা গভীর ছড়িয়েছে পাঞ্জাব পুলিশে। তদন্তকারীরা জেনেছেন, কার থেকে কত টাকা ঘুষ নিয়েছেন, তা একটি লাল ডায়েরিতে লিখে রাখতেন ভুল্লার।

আরও পড়ুন-কর্ণের বিদায়

জানা গেছে, ভুল্লার একজন স্ক্র্যাপ ডিলারের মামলা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময়ই ধরা পড়ে যান হাতেনাতে। অভিযোগকারী আকাশ বাট্টাকে ঘুষের প্রথম কিস্তি দেওয়ার জন্য ভুল্লারের মোহালি অফিসে ডাকা হলে সিবিআই সেখানে অভিযান চালায়। এই ঘটনার পর তাঁর সঙ্গে যুক্ত এক মধ্যস্থতাকারীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই পাঞ্জাব ও চণ্ডীগড়ের বিভিন্ন স্থানে ভুল্লারের একাধিক ঠিকানায় তল্লাশি চালায়। ১৫টিরও বেশি সম্পত্তির নথি, দুটি বিলাসবহুল গাড়ির চাবি (একটি মার্সিডিজ ও একটি অডি), ২২টি দামি ঘড়ি, বেশ কয়েকটি লকারের চাবি, ৪০ লিটার আমদানি করা মদ এবং একটি ডবল-ব্যারেল বন্দুক, একটি পিস্তল, একটি রিভলভার এবং গোলাবারুদ-সহ একটি এয়ারগান-সহ নানা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মধ্যস্থতাকারী কৃশানুর কাছ থেকে আরও ২১ লক্ষ টাকা নগদ পাওয়া গেছে। তল্লাশি ও তদন্ত এখনও জারি আছে। ২০২৫ সালের ১১ অক্টোবরের একটি রেকর্ড করা হোয়াটসঅ্যাপ কল প্রমাণ করে যে ভুল্লার কৃশানুকে ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ধৃত ডিআইজিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঞ্চকুলায় নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০৭ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার পূর্বে পতিয়ালা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে কাজ করার পর ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর রূপনগর রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ভিজিল্যান্স ব্যুরোর যুগ্ম পরিচালক এবং জাগরাঁও, মোহালি ও সাঙ্গরুরে সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে স্বল্প-পরিচিত ভুল্লার অতীতে ‍‘যুদ্ধ নেশার বিরুদ্ধে’ নামে মাদকবিরোধী অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি পাঞ্জাবের প্রাক্তন ডিজিপি মেহাল সিং ভুল্লারের পুত্র। এছাড়া, মাদক চোরাচালানের অভিযোগে আকালি নেতা বিক্রম সিং মাজিথিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলেরও প্রধান ছিলেন তিনি। এমন একজন পুলিশ কর্তার এমন পরিণতিতে স্তম্ভিত বিভিন্ন মহল।

Latest article