সংবাদদাতা, ময়নাগড় : ময়নাগড়ের ঐতিহ্যবাহী ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন চারশো বছরেরও বেশি প্রাচীন, পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার রাসমেলা। ময়না রাজপরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ’র রাসযাত্রা ঘিরে থাকে জমজমাট মেলা। গত দু’বছর ধরে করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ ছিল ময়নার রাসমেলা। বর্তমানে করোনা কাঁটার জ্বালা প্রায় নেই বললেই চলে। এবার তাই রাসমেলা ঘিরে বাড়তি উদ্যমে মেতেছে ময়নাগড়। ময়না রাসমেলার এবার ৪৬২ বছর। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে রাসমেলার।
আরও পড়ুন-নোটবন্দি ছিল মস্ত ভাঁওতা
ময়না রাজপরিবারের বাসস্থানই ময়নাগড় হিসেবে পরিচিত। চারদিকে পরিখাবেষ্টিত ময়নাগড়ে রাজপরিবারের কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউর মন্দির রয়েছে। প্রতি বছর রাসপূর্ণিমার আগে একাদশী তিথিতে শ্যামসুন্দর জিউর রাসযাত্রা শুরু হয়। রাসপূর্ণিমার তিথিতে সন্ধ্যাবেলায় শ্যামসুন্দর জিউকে ময়নাগড়ের মন্দির থেকে সুসজ্জিত নৌকায় চাপিয়ে আতশবাজি, বাদ্য-সহ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে পরিখার জল পেরিয়ে রাসমঞ্চে নিয়ে আসা হয়। শ্যামসুন্দর জিউ’র এই নৌ রাসযাত্রা দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। সেই উপলক্ষে রাসমঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় জমজমাট মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন-রেশন বণ্টনে গোটা দেশে বাংলা মডেল চালুর দাবি
ময়নার এই রাসমেলা পরিচালনায় হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষ যুক্ত থাকেন। তাই ময়না রাসমেলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি অতি পরিচিত। আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই উজ্জ্বল নিদর্শন ময়নার রাসমেলাকে এনে দিয়েছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের স্বীকৃতি। মেলায় ময়নার বিখ্যাত মিষ্টি কদমা, বাতাসা ছাড়াও সবং-এর মাদুর-সহ অবিভক্ত মেদিনীপুরের বিভিন্ন কুটির শিল্পসামগ্রীর কেনাবেচা চলে। প্রায় ১৫ দিন ধরে চলা রাসমেলায় কয়েকশো দোকানপাট বসে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর মানুষ মেলা দেখতে আসেন।