নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : গত দু’বছরে সেনাবাহিনীতে কোনও নিয়োগ হয়নি। গত শীতকালীন অধিবেশনেই প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী স্পষ্ট, সেনাবাহিনীতে (Indian Army Recruitment) বর্তমানে ঘাটতি রয়েছে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৬৫৩। বিতর্কিত দুই প্রতিবেশী একদিকে চিন এবং অপরদিকে পাকিস্তান। তার মধ্যে আবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক একথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও স্বীকার করেছিলেন। এই অবস্থায় ভারতীয় সেনাবাহিনীতে জওয়ানদের ব্যাপক ঘাটতি (Indian Army Recruitment) নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যা গত তিন দশকের রেকর্ড। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাটের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেনাবাহিনীতে ঘাটতি অফিসার পদমর্যাদায় ৭ হাজার ৪৭৬ জনের এবং জওয়ানদের ঘাটতি ৯৭ হাজার ১৭৭। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, গত তিন দশকে সেনাবাহিনীতে ঘাটতি কখনও ৭ হাজারের নিচে নামেনি।
আরও পড়ুন – জ্বালানি বিড়ম্বনার মুখে নির্লজ্জ যুক্তি মন্ত্রীর
জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট ক্ষমতা ১৪ লক্ষ বা ১.৪ মিলিয়ন। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার জওয়ান অবসর নেন বলে দাবি করেছেন সেনাবাহিনীর প্রাক্তন আধিকারিকরা। ফলে প্রতি বছর সেনাবাহিনীতে স্বাভাবিকভাবেই ঘাটতি তৈরি হয়। শুধুমাত্র সেনাবাহিনীই নয়, ভারতীয় নৌসেনায় ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ২৬৫ জন অফিসার এবং ১১ হাজার ১৬৬ জন নাবিক। ভারতীয় বায়ুসেনায় অফিসার পদে ঘাটতি ৬২১ এবং জওয়ানের ঘাটতি রয়েছে ৪ হাজার ৮৫০। যদিও ২০২০ সালের মে থেকে করোনা এবং লকডাউন ও নানা বিধিনিষেধ জারি হওয়ার কারণে সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ ২০২০ সালের মে মাস থেকেই পূর্ব লাদাখে তৈরি হয়েছে চিনের সঙ্গে সংঘাত। তারপরেও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকা এবং সেনাবাহিনীতে ঘাটতি তৈরি হওয়া যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট গত মার্চে জানিয়েছেন, ২০২০-২১ সালে ৯৭টি র্যায়লি হওয়ার কথা থাকলেও তারমধ্যে মাত্র ৪৭টি এখনও পর্যন্ত হয়েছে। সেনাবাহিনীর কমন এন্ট্রান্স টেস্ট হয়েছে মাত্র চারটি। সেখানে ২০২১-২২ সালে ৮৭টির মধ্যে হয়েছে মাত্র চারটি র্যাটলি কিন্তু কোনও পরীক্ষা হয়নি। ফলে গত দু’বছরে সেনাবাহিনীতে কোনও নিয়োগও হয়নি।