গত দু’বছরের বেশি কোভিড মহামারির জন্য দেশ-বিদেশের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। সবদিক থেকেই মানুষের আয় কমেছে, রোজগার কমেছে, ব্যবসা-বাণিজ্য একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। করোনা, আমফান, ইয়াসের ঝড় বয়েছে বাংলার বুকেও। কিন্তু তার মাঝেই দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে বাংলার অর্থনীতি। এত ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করেও দেশের অর্থনীতির নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ এই মুহূর্তে রয়েছে চতুর্থ স্থানে। দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ২০২০-২১ অর্থবর্ষের হিসেব কষে এমনই তথ্য দিয়েছে খোদ ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। গত অর্থবর্ষে দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে ছিল বাংলা। করোনা মহামারির মধ্যেই আরও দু’ধাপ উপরে উঠলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য।
আরও পড়ুন-আজ থেকে নেত্রীর সমর্থনে প্রচার ও জনসংযোগ অভিষেকের
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই মর্মে জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের গত এক বছরে বাংলার অর্থনৈতিক কর্যকলাপ বা সার্বিক বাণিজ্য বেড়েছে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, সাধারণ মানুষের কাছে নগদের জোগান বাড়িয়েই বাজিমাত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
কিন্তু কিভাবে বিশ্বজুড়ে মন্দার বাজারে এমনটা সম্ভব হল?
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য বলছে, রাজ্যের মোট উৎপাদন বা জিডিপি থেকে ট্যাক্স বাদ দিলে পাওয়া যায় ‘গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড’। তার থেকে আরও কিছু উপাদান বাদ দিয়ে ‘নেট ভ্যালু অ্যাডেড’ বা এনভিএ’র হিসেব কষা হয়। স্বাভাবিক কারণেই জিডিপি থেকে এনভিএ’র অঙ্ক কম হয়। সেখানে এনভিএ’র নিরিখে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রাজ্য। চলতি বাজারদর অনুযায়ী, বাংলার মোট এনভিএ’র পরিমাণ ১১ লক্ষ ৪ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তা ছিল ১০ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। ২০১১ সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসা থেকে প্রায় আড়াই গুণ বেড়েছে রাজ্যের এনভিএ।
আরও পড়ুন-গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিবসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন
‘অ্যাডভান্স এস্টিমেট’ অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট উৎপাদন বা জিডিপি’র পরিমাণ প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকা। তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ, জিডিপি’র নিরিখে রাজ্য যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে, সেই তত্ত্বকেই সিলমোহর দিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।