প্রতিবেদন: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়ার নাতি প্রাজ্জ্বল রেভান্নার (Prajwal Revanna) যৌন-ভিডিও কেলেঙ্কারি লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে দেশজুড়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দেওয়ায় ঘুম উবে গেছে বিজেপি নেতৃত্বের। নিজেদের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে দোষারোপের পালা। অভিযোগ উঠেছে, জোটসঙ্গী জেডিএসকে জেনেশুনেই আড়াল করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে উঠেছে যে কর্নাটকে বিজেপি-জেডিএসের জোট গভীর অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। গেরুয়া দলের মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বিদ্রোহ। প্রাজ্জ্বলকে এখনই জেডিএস থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। এদিকে মহিলা কমিশনের সুপারিশে দেবেগৌড়ার নাতির যৌন-কেলেঙ্কারির তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। শুধু দেবেগৌড়ার নাতি প্রাজ্জ্বল নয়, তাঁদের পরিবারের এক মহিলাকর্মী এবং তাঁর মেয়ে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছেন দেবেগৌড়ার ছেলে অর্থাৎ প্রাজ্জ্বলের বাবার বিরুদ্ধেও। কিন্তু এই মুহূর্তে প্রাজ্জ্বল জার্মানিতে আত্মগোপন করে থাকায় তাঁর এখনও নাগাল পাননি তদন্তকারীরা।
বিজেপি নেতা দেবরাজে গৌড়া দাবি করেছেন, দলের রাজ্য সভাপতি বিজয়েন্দ্রকে তিনি ২০২৩-এর ৮ ডিসেম্বরই এ-ব্যাপারে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নাতি প্রাজ্জ্বল রেভান্না (Prajwal Revanna) সহ দেবেগৌড়ার পরিবারের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এমন কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠছে যা রীতিমতো বিপদে ফেলে দিতে পারে বিজেপি এবং এনডিএকে। বিজেপি নেতার যুক্তি, তাঁর হাতে এমন একটা পেনড্রাইভ এসেছে যাতে ২৯৭৬টি ভিডিও আছে। এবং সরকারি আধিকারিক-সহ বেশ কিছু মহিলার আপত্তিকর ছবি রয়েছে তাতে। এই ভিডিও ফুটেজগুলো দেখিয়েই ব্ল্যাকমেল করে তাঁদের যৌনকর্মে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হত। রেভান্নাকে হাসান কেন্দ্রে আবার মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারেও উঠেছিল তীব্র আপত্তি। কিন্তু ওই বিজেপি নেতার কথায় আদৌ গুরুত্ব দেয়নি গেরুয়া নেতৃত্ব। রেভান্নাকে এরপরেও হাসান কেন্দ্রে আবার এনডিএ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ২৬ এপ্রিল নির্বাচনও হয়ে গিয়েছে ওই কেন্দ্রে।
এইচ ডি দেবেগৌড়ার পরিবারের ৪৭ বছর বয়সের ওই মহিলাকর্মী অভিযোগ করেছেন, কাজে যোগ দেওয়ার ৪ মাস পর থেকেই নিজের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে তাঁকে কয়েকবছর ধরে লাগাতার যৌন হেনস্থা করতেন প্রাজ্জ্বল। শুধু তাঁকেই নয়, অশ্লীল মেসেজ পাঠাতেন তাঁর মেয়েকেও। শুধু প্রাজ্জ্বল নয়, তাঁর বাবা এইচ ডি রেভেন্নাও স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাঁকে ঘরে ডেকে পাঠিয়ে ফল খাইয়ে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করতেন তাঁকে। বাড়ির আরও ৬ পরিচারিকাও ভয়ে ভয়ে থাকতেন, কখন কার ডাক পড়ে— এই আতঙ্কে।
আরও পড়ুন- যোগীরাজ্যে ফের মধ্যযুগীয় বর্বরতা নাবালিকার উপর, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ, মুখে গরম লোহায় নাম খোদাই