প্রতিবেদন : গত কয়েকদিন ধরেই ইউক্রেনের মারিউপোল শহরে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া (Russia)। রুশ আক্রমণে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের এই বন্দর শহর। এই শহরের দখল কার্যত চলে গিয়েছে পুতিন বাহিনীর দখলে। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের (Ukraine) বহু সেনা রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। প্রথমে রবিবার দুপুরের মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল মস্কো। কিন্তু রাশিয়ার সময়সীমার মধ্যে অনেকেই আত্মসমর্পণ করেননি। যে কারণে শেষবারের মতো বুধবারের মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছে পুতিন বাহিনী। রাশিয়া স্পষ্ট জানিয়েছে, হয় আত্মসমর্পণ কর, না হয় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও।
আরও পড়ুন-বিরাট কিছুদিন বিশ্রাম নিক, রানে ফেরার উপায় বাতলালেন শাস্ত্রী
রুশ (Russia) সেনার ওই হুমকির পরে মারিউপোলে থাকা ইউক্রেনীয় সেনার মেরিন কমান্ডার মেজর জেনারেল সেরহি ভোলইয়ানারের এক ভিডিও বার্তা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিও বার্তায় ভোলইয়ানার বলেছেন, চারিদিক থেকে আমাদের ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। ধীরে ধীরে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে সাক্ষাৎ মৃত্যু। মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের বাঁচান। হয়তো এটাই আমাদের জীবনের শেষ বার্তা। সম্ভবত আমাদের জীবনের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি আছে। তাই বিশ্ব নেতাদের অনুরোধ করছি, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। তৃতীয় কোন দেশে আমাদের সরিয়ে নিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। শুধু সেনাবাহিনী নয়, বহু সাধারণ মানুষও এই শহরে আটকে আছেন। আহত অবস্থায় ছটফট করছেন প্রায় হাজারখানেক সেনা। তাঁদের চিকিৎসাও করা যাচ্ছে না। সকলের কাছে আমাদের আর্জি, দয়া করে আমাদের বাঁচান। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, রাশিয়ার সেনা গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নৃশংস ও নিষ্ঠুর। রুশ সেনার মতো অমানবিক আর কেউ নয়। তবে আমাদের হাতে যদি উন্নতমানের অস্ত্রশস্ত্র থাকত তবে অনেক আগেই আমরা এই যুদ্ধ শেষ করে দিতাম। এই মুহূর্তে ইউক্রেনবাসীকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক দুনিয়ার উচিত আরও বেশি অস্ত্র সাহায্য করা। অন্যদিকে এদিন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনে চারদিন যুদ্ধবিরতির আর্জি জানিয়েছেন। গুতেরেস বলেছেন, চারদিন যুদ্ধ বন্ধ থাকলে বহু নিরীহ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনীয়দের খাদ্য ও ওষুধ দিয়ে সাহায্য করা যাবে। রুশ আক্রমণের জেরে মানবিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে ইউক্রেনে। সবার আগে এই সঙ্কটের মোকাবিলা করা দরকার।