প্রতিবেদন : সাত সহোদর ডাকাত যশোরের জমিদারবাড়িতে ডাকাতি করে ফেরার সময় হঠাৎই মা কালী তাদের আদেশ দেন, ‘‘আমাকেও তোদের সঙ্গে নিয়ে চল।” মায়ের কথামতো ওই ডাকাত দল তাদের সঙ্গে কালী মাকেও নিয়ে আসে। কিন্তু তাঁকে রাখার জায়গা নিয়ে ধন্দে পড়ে যায়। শেষ অবধি প্রায় ৩০০ কিমি নদীপথ পাড়ি দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বনগাঁ থানার কালুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পুরাতন বনগাঁর ইছামতী নদীতীরে হাজির হয় ডাকাতের দল।
আরও পড়ুন-‘ভাগিনা’ দস্যুদের ‘গাছ-কালী’
জঙ্গল ঘেরা বটগাছের নিচে মাকে রাখা হয়। গাছের নিচে কালী মায়ের মূর্তি রেখে পুজোর জন্য পুরোহিত খুঁজতে বের হয় ডাকাত দল। স্থানীয় এক চক্রবর্তী পুরোহিতকে খুঁজে বের করে। এরপর তিনিই মায়ের পুজো শুরু করেন। প্রায় ৪০০ বছর আগের এই ঘটনা। সেই থেকে মা কালী ওখানেই পুজো পেয়ে আসছেন। পুরাতন বনগাঁর এই কালীমন্দির তারপর থেকেই সাতভাই কালীতলা নামে লোকমুখে পরিচিতি লাভ করে। বছরে ৩৬৫ দিন পুরনো প্রথা মেনে দুবেলা পুজো হয়। সারা বছ প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়।
আরও পড়ুন-তিন ধর্মের মিলনভূমি কিরীটেশ্বরী সতীপীঠ
তবে কার্তিক ও পৌষ মাসে দূরদূরান্তের বহু মানুষও হাজির হন সাতভাই কালীতলা মন্দিরে। ইছামতী নদীর ধারে বর্তমানে প্রায় এক বিঘা জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির। মন্দির ঘিরে গড়ে উঠেছে বাজার, কমিউনিটি হল, স্কুল। এই মন্দিরে বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন পুরোহিতরা। বর্তমানে একই বংশের সাত পুরোহিত পালা করে নিত্যপুজো করেন। তবে প্রাচীন মূর্তিটি বটগাছের শিকড়ে ঢেকে গিয়েছে। এখনকার পূজিত মূর্তিটি পরে তৈরি করা। কালীপুজোর দিন মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন হয়।