ব্যুরো রিপোর্ট : সতর্কতা মেনে খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। ক্লাসঘরগুলিতে করা হয় স্যানিটাইজ। দূরত্ববিধি বজায় রাখতে মেঝেতে গোল দাগ এবং বেঞ্চেও মার্কিং। স্কুলের বাইরে যাতে আবর্জনা না জমে সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে প্রশাসন জানিয়েছে। গত জুন মাসে বহরমপুরের মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পেয়ে গেলেও পঠন-পাঠন চালু হয়নি। সেটিও খুলছে। উপাচার্য ড. সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৫টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পঠন-পাঠন শুরু হচ্ছে। এমএ-এমএসসিতে রয়েছেন ৭০০র বেশি ছাত্রছাত্রী।’’
করোনার কারণে প্রায় ২০ মাস পর খুলছে। তার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিচ্ছন্ন করার ছবি ধরা পড়ল। চাঁচল কলেজের ক্লাস স্যানিটাইজ করে দরজা, জানালায় রং করা হয়। দীর্ঘ দুই বছর বন্ধ থাকায় নোংরা আবর্জনায় পরিপূর্ণ একাধিক ক্লাস ঘর।
আরও পড়ুন : পৌষমেলা না হলে আন্দোলন
এছাড়াও ঘরগুলিতে লাইট ও পাখা অকেজো। নতুন করে আলো, পাখা লাগানো হয়। চাঁচল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অজিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশিকা মেনে মঙ্গলবার থেকে কলেজ খুলছে। সাতদিন ধরে চলছে সাফাইয়ের কাজ। কিন্তু এর মধ্যে অনলাইন ক্লাস জারি থাকবে। কারণ ছাত্র-ছাত্রীদের টিকাকরণের সঠিক তালিকা আমাদের কাছে নেই। অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি শুরু হলে ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ টিকাকরণ করাতে পারব।’’
আরও পড়ুন : হাওড়ায় এবার হবে ৫০-এ ৫০
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পরিচ্ছন্ন করে খোলা হবে। এজন্য সরকারের তরফে সর্বত্রই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা। মানতে হবে কোভিড বিধি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি বারবার স্কুল কর্তৃপক্ষ, জেলাশাসক, ডিআই-এর সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং করেছি। স্কুল-কলেজগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হোক, তার জন্য টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আশা করব অধিকাংশ স্কুল-কলেজই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সমস্ত শিক্ষকদের স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্যানিটাইজার মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পঠন-পাঠন হবে আমি আশা রাখি সকালেই সরকারের এই নির্দেশ মেনে চলবেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যরক্ষায় সরকার সচেষ্ট।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খুলছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি। সেই সঙ্গে সংগঠনের পক্ষ থেকে সমস্ত শাখা ও সেলের জন্য কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রত্যেকটি কলেজের গেট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পতাকা দিয়ে ‘স্বাগতম-বার্তা’-র ফ্লেক্স লাগানো হবে। আগামী ১৬, ১৭ এবং ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিটি কলেজের প্রধান গেটে প্রত্যেক পড়ুয়াদের সামর্থ্যমতো চকোলেট, ফুল, শুভেচ্ছাবার্তা দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হবে। এছাড়া পড়ুয়াদের সঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজার আছে কি না সেদিকেও লক্ষ রাখবেন সংগঠনের সদস্যরা। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে মাস্ক পরে ক্যাম্পাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর পাশাপাশি যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটগুলিতে হাজির থাকবেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য নিজে কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকার কলেজগুলিতে গিয়ে সরেজমিনে গোটা পরিস্থিতি দেখবেন।