প্রতিবেদন : বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (WB secondary exam)। একই দিনে শুরু হতে চলেছে হাই মাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিলের পরীক্ষাও। মাধ্যমিক চলবে ৪ মার্চ পর্যন্ত। আর হাই মাদ্রাসার পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মার্চ।
এবার মাধ্যমিকে বসতে চলেছে প্রায় ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রী। পরীক্ষা (WB secondary exam) নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যাতে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন সেজন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। বাড়তি বাস, মেট্রো, লোকাল ট্রেন চালানো হবে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য। মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন গোর্খাল্যান্ডপন্থীরা পাহাড়ে বন্ধ ডাকায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর হুঁশিয়ারির পর বন্ধের রাস্তা থেকে পিছিয়ে এসেছেন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডরা।
সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন স্কুলে প্রশ্নপত্র পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হবে। পরীক্ষা শুরুর ঠিক ১৫ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র হাতে পাবে ছাত্রছাত্রীরা। টোকাটুকি বা পরীক্ষাকেন্দ্রে ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থার নেওয়ার কথা জানিয়েছে পর্ষদ। মাধ্যমিকের ২৮৬৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ৯৯ শতাংশের বেশি স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যেসব স্কুলে ক্যামেরা বসানো সম্ভব হয়নি, সেগুলিকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করে বাড়তি নজরদারি চালাতে বলেছে পর্ষদ। সল্টলেকে পর্ষদের সদর কার্যালয় থেকে অ্যাপ এবং সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি চালানো হবে। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে কলকাতার পাশাপাশি মেদিনীপুর, বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গের জন্য চালু করা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। কোনওরকম সমস্যায় পড়লে পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকরা সরাসরি কন্ট্রোল রুমে ফোন করতে পারবেন।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, মে মাসের শেষ সপ্তাহে মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হবে। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১১ লক্ষ। সেই হিসেবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৪ লক্ষ।
আরও পড়ুন:অভিষেককে জানাতেই অ্যাডমিট কার্ড
মাধ্যমিকের মতো এবছর হাই মাদ্রাসাতেও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এবার এই পরীক্ষায় বসছে ৭৫ হাজার পড়ুয়া। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার। এবার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ ছাত্রী এবং ছাত্র ৩৬ শতাংশ। পরীক্ষা হবে ২০৪টি কেন্দ্রে। হাই মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিন জানিয়েছেন, প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে সেন্টার সুপারের পাশাপাশি কড়া পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মোবাইল, ক্যালকুলেটর সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকা যাবে না।
পরীক্ষার আগে ও পরে ভিড় সামলাতে রাস্তায় থাকবে সর্বাধিক সরকারি বাস। সকাল ও বিকেলে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিপো থেকে ছাড়বে অতিরিক্ত বাস। পরীক্ষার সময়ে যাতে সর্বাধিক বাস রাস্তায় থাকে, তার জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। কন্ট্রোল রুম থেকে বাস পরিষেবায় নজরদারি। মাধ্যমিকের সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ছুটি পাবেন না পরিবহণকর্মীরা। নির্ধারিত স্টপেজ না থাকলেও বাসে উঠতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। স্রেফ বেসরকারি বাস ও মিনি সংগঠন নয়, মাধ্যমিকের সময়ে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার আবেদন জানিয়ে অটোচালকদের সংগঠনগুলিকেও চিঠি দিয়েছে পরিবহণ দফতর।
বাদ যাচ্ছে না মেট্রোও। পরীক্ষার সময়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা অবধি, আবার পরীক্ষা শেষে দুপুর ৩টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ৪টে করে অতিরিক্ত মেট্রো। এমনকী, দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুটে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৫-৬ মিনিট অন্তর মিলবে মেট্রো। যেদিন মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকবে, সেদিন শিয়ালদহ-রানাঘাট ও বারাসত-বনগাঁ সেকশনে বাড়তি ট্রেন চালানো হবে। গ্যালপিং ট্রেন নির্ধারিত স্টেশনের বাইরেও পলতা, জগদ্দল, কাঁকিনাড়া, পায়রাডাঙা ও বিভূতিভূষণ হল্টেও দাঁড়াবে ট্রেন।