১০ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ, দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড

বাধা সরল কোর্টের, পুলিশই গ্রেফতার করল শাহজাহানকে

Must read

প্রতিবেদন : আদালত রাজ্য পুলিশের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হল সন্দেশখালির শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। বৃহস্পতিবার ভোরে মিনাখাঁর বামনপুকুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। এদিনই বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতে চাইলে বিচারক ১০ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে শাহজাহান মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে। পুলিশ দুপুরে বসিরহাট থেকে শাহজাহানকে ভবানীভবনে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার বিকেলেই দলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলনে সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার ও মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়ে দেন, শাহজাহানকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করা হল। একইসঙ্গে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকেও সরানো হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি। দেবে না। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে মহেশতলায় ও পরে নিজের এক্স-হ্যান্ডেলেও আদালতের রায়ের কপি তুলে বলেছিলেন, কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় শাহজাহান মামলায় পুলিশ কিছু করতে পারছে না। আদালতের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে রাজ্য পুলিশ যে কোনও দিন শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে। এত অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে, শাহজাহানকে পারবে না কেন? এরপরই আদালত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হল শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। এদিন আমির আলি গাজিকেও রাউরকেল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫ দিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছে আদালত তাকে। শাহজাহানের গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার সকালে মিনাখাঁ থানায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, পুলিশ তার কাজ করেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় কিছু করা যাচ্ছিল না। তিনি বলেন, বেশ কিছু বছর আগে অভিযোগ ছিল বলে তদন্তে সময় লাগছিল। ইডি আধিকারিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল। ঠিক সেই সময়ই ইডি হাইকোর্টে যায় এবং হাইকোর্ট পুলিশের সবরকমের কার্যকলাপের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। সোমবার আদালত জানায় শাহজাহানকে গ্রেফতারে পুলিশের পদক্ষেপে কোনও বাধা নেই। তারপরই পুলিশ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করল শাহজাহানকে। তাঁর সংযোজন, নিষেধাজ্ঞা না থাকায় রাজ্য পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু ইডি এতদিন ধরে শাহজাহানকে গ্রেফতারের জন্য তৎপর হল না— সে-প্রশ্নও এখন প্রাসঙ্গিক। এদিন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও এই গ্রেফতারিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, প্রমাণ হল বাংলায় আইনের শাসন আছে। তবে গোটা ঘটনায় ইডির ব্যর্থতা সব থেকে বেশি প্রকট হচ্ছে। এই চর্চাও এখন রাজ্য রাজনীতিতে হচ্ছে, যেখানে রাজ্য পুলিশ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারল সেখানে ৫৬ দিন ধরে কেন্দ্রীয় এজেন্সি কেন তার নাগাল পেল না? এই ব্যর্থতা নিয়ে কী বলবে রাজ্য বিজেপির দলবদলু গদ্দার, ট্রেনি সভাপতিরা। যারা কথায় কথায় তৃণমূল সরকারের ভুল ধরতে ব্যস্ত থাকে। এবার জবাব দিক বিজেপি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এই গ্রেফতারে আমরা স্বাগত জানাই। রাজ্য পুলিশ করে দেখিয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে-কথা সামনে এনেছিলেন আদালত তার বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ায় রাজ্য পুলিশ তার কাজ করেছে। তবে এর সঙ্গে বিজেপির দ্বিচারিতা ও কর্মকাণ্ড নিয়ে একগুচ্ছ প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- হিম্মত থাকলে গদ্দার-হিমন্তদের গ্রেফতার করে দেখাক বিজেপি

Latest article