প্রতিবেদন : জাপানের ৯৬ তম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শিনজো আবে। দুই দফায় প্রায় নয় বছর জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। প্রথমবার ২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন শিনজো। ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। এরপর ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একটানা ৮ বছর ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। জাপানের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশিদিন প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন তিনি। ১৯৫৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর টোকিওতে এক রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম শিনজোর।
আরও পড়ুন-রাষ্ট্রনেতাদের শোক
শিনজোর বাবা শিনতারো আবে ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। মা উকো কিশিও ছিলেন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বড় দাদা হিরোনবু এবং ছোটভাই নবুও কিশিও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। শিনজোর দাদামশাই নবুসুকে কিশি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর বড় দাদা হিরোনবু ছিলেন মিতসুবিসি প্যাকেজিং কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও। ছোটভাই নবু কিশি বিদেশমন্ত্রকের উপমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি রেডিও জকি আকেই আবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাজনীতির ময়দানে এসে তিনি যোগ দেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে। ২০২২ সালের ৮ জুলাই এক নির্বাচনী প্রচার সভায় আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। সেইকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হবার পর তিনি ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যালিফোর্নিয়া থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৩ সালে জাপানের আর্থিক পুনরুজ্জীবনের ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের জন্য শিনজো যে কৌশল নিয়েছিলেন ইংরেজিতে তাকে ‘অ্যাবেনমিকস’ বলে।
আরও পড়ুন-দেউচায় তিনশো পুলিশে চাকরি
মূলত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছিলেন তিনি। প্রথমটি হল, মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। দ্বিতীয়টি হল, সংক্ষিপ্ত মেয়াদের জন্য অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং পরবর্তী বাজেটে উদ্বৃত্ত অর্জনের জন্য একটি পরিবর্তনীয় আর্থিক নীতি গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়টি হল, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও পরিকাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। অসুস্থতার কারণে ২০২০ সালের ২৮ অগাস্ট তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ভারত সরকার শিনজোকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করেছে। প্রয়াত শিনজোর শখ ছিল পড়া এবং লেখা। দেশবাসীকে সন্তান জন্মানোয় উৎসাহ দিলেও শিনজোর নিজের কোনও সন্তান ছিল না।