সীতার পাতালপ্রবেশ বিতর্ক সংক্রান্ত মামলায় পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে ক্লিনচিট দিল উদয়পুরের আর কে পুর থানা। চার্জশিট না দিয়ে তারা কোর্টকে লিখিতভাবে সুপারিশ করল কুণালকে অভিযোগমুক্ত করা হোক।
উদয়পুর আদালতে এফআরটি পেশ করে থানা বলেছে, কুণালের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে তাঁকে অভিযোগমুক্ত ঘোষণা করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন-গার্হস্থ্য হিংসা : যা বলল সুপ্রিম কোর্ট
কোর্টে থানা লিখিতভাবে বলেছে, অভিযোগকারীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। উল্টে কুণাল ঘোষ তদন্তকারীদের সামনে উপস্থিত হয়ে তাঁর বয়ান রেকর্ড করিয়ে গিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে থানার রুটিন বক্তব্য, যদি পরবর্তীকালে অভিযোগকারী তদন্তযোগ্য নতুন কোনও প্রামাণ্য পেশ করেন, তাহলে আবার তদন্ত হতে পারে। অন্যথায় কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার কোনও উপাদান নেই।
উল্লেখ্য, একই অভিযোগে ত্রিপুরার একাধিক থানায় কুণালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বিজেপি সরকারের পুলিশ। সোমবারেই অমরপুর কোর্টে উপস্থিত হন তিনি। এখানকার তিনটি মামলাতেই জামিন পান। অন্যদিকে হুবহু একই অভিযোগে করা আর কে পুর থানার মামলায় পুলিশ কুণালকে অপরাধমুক্ত জানাল।
আরও পড়ুন-ত্রিপুরায় অবাধ ভোট চাই, কমিশনে দাবিপত্র তৃণমূলের
তৃণমূল নেতার আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী বলেন, আর কে পুর থানাই এখনও পর্যন্ত যথাযথ তদন্ত করল। না হলে সীতার পাতালপ্রবেশ বিষয়টির উল্লেখ করার জন্য কোনও মামলা বা চার্জশিট হতে পারে না। ভিত্তিহীন অভিযোগে হেনস্তা ও হয়রানির জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একগুচ্ছ মামলা দেওয়া হয়েছে। সবক্ষেত্রেই একই মিথ্যা অভিযোগ। বেনজিরভাবে একদিনে একসঙ্গে একইসময়ে কুণালকে জেরা করেছিল পাঁচটি থানা। তারমধ্যে তিন–চারটি থানা তদন্ত না করেই চার্জশিট দিয়েছে। একটি থানা আসল নিরপেক্ষ রিপোর্ট দিয়ে দেখিয়ে দিল এই অভিযোগের প্রকৃতপক্ষে কোনও সারবত্তাই নেই।
আরও পড়ুন-কলকাতায় প্রয়াত কে কে, শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
উল্লেখ্য, কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে যারা তৃণমূলকে মারছে, সন্ত্রাস করছে, মা-বোনেরা তাদের জিজ্ঞেস করুন রামরাজ্যে মা সীতার স্থান হল না কেন? কেন পাতালপ্রবেশের মতো আত্মঘাতী পদক্ষেপ নিতে হল তাঁকে? এই প্রশ্নতেই রে রে করে ওঠে বিজেপি। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলে একগুচ্ছ মামলা দেয়। থানাগুলির নোটিশ পেয়ে কুণাল রামায়ণ ও সংশ্লিষ্ট বইগুলি এনে বুঝিয়ে দেন তিনি কোনও বিকৃত কথা বলেননি। মনগড়া তথ্যও দেননি। কাউকে আঘাত করার আদৌ কোনও ইচ্ছে তাঁর ছিল না।
ত্রিপুরার আর কে পুর থানা সূত্রে খবর, তাঁরা এই বিষয়টি তদন্ত করে কুণালের বিরুদ্ধে কিছু পাননি। যাঁকে দিয়ে অভিযোগ করানো হয়েছিল তিনিও কিছু দিতে পারেননি। উল্টে কুণাল ঘোষ রামায়ণ ও সেই সংক্রান্ত গুচ্ছের বই এনে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ফলে কোর্টকে তাঁরা অভিযোগমুক্ত করার সুপারিশ করেছেন।