জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গ, লড়ছে প্রশাসন

Must read

প্রতিবেদন :  উদয়নারায়ণপুর ও আমতার পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত। আমতার ঝিকিরা পঞ্চায়েত সোমবার নতুন করে জলভাসি হয়েছে। এই নিয়ে আমতার ৭টি গ্রামপঞ্চায়েত জলমগ্ন। ৪০টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। জেলাশাসক মুক্তা আর্য আমতায় সেচ ও বিদ্যুৎ দফতর এবং ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বিকেবাটি এলাকায় জলভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন স্থানীয় বিধায়ক সুকান্ত পাল। সেচ আধিকারিকরা নদীবাঁধ দিয়ে জল ঢোকা বন্ধ করতে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন। উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের জলের উচ্চতা ৭-৮ইঞ্চি কমলেও বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। রাস্তাঘাট, বাড়িঘরের জল কমেনি। শতাধিক ত্রাণশিবিরে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ। স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা কখনও নিজেই ট্রাক্টর চালিয়ে, কখনও নৌকায় বা স্পিডবোটে জলমগ্ন এলাকার মানুষদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন। তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন। কোথাও ত্রাণবিলি করছেন। জেলাশাসক জানান, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন :কন্যাশ্রী পেয়ে আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স-সহ স্নাতক হয়েছি

এদিকে প্রবল বৃষ্টি তারই মধ্যে ডিভিসির ছাড়া জলে এখনও জলমগ্ন হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার বেশ কিছু এলাকা। প্রশাসনিক তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। হাওড়ায় অতিবৃষ্টিতে বেহাল রাস্তা। কীভাবে দ্রুত ভাঙা রাস্তা মেরামত করা যায়, তার ব্যবস্থা নিতে চলেছে হাওড়া পুরসভা। রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ, হাওড়া পুরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের চেয়ারম্যান ডাঃ সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুর কমিশনার এবং ইঞ্জিনিয়ররা বিভিন্ন এলাকার রাস্তা পরিদর্শন করেন। হুগলির আরামবাগে এখনও বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন। জলে ডুবে থাকা বাড়ির আসবাব, জিনিসপত্রের ক্ষতির আশঙ্কা বাসিন্দাদের। স্থানীয় সূত্রে দাবি, প্রায় ১০ হাজার বাড়ি প্লাবনের কবলে। গ্রামবাসীদের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু জায়গায়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় ধসের কারণে ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি দোকান। রবিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে ডোমঘাটের কাছে কংসাবতী নদীর তীরবর্তী এলাকায়। এখনও জলমগ্ন ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত ঘাটাল পুরসভা। চলছে নৌকা ও স্পিডবোট। এখনও জলের তলায় বাড়িঘর, দোকান। একতলা বাড়ির ছাদ পর্যন্ত জল। বড় বাজার কার্যত নদীর চেহারা নিয়েছে। এটাকে এখন বলা হচ্ছে নৌকাঘাট।

আরও পড়ুন :বিধায়কের দূরদৃষ্টি, চারিদিকে জল, তবু নির্বিঘ্নে প্রসব ৯ প্রসূতির

ডিভিসি জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে অজয় নদের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বীরভূমের নানুর থানা সুন্দরপুর গ্রাম। গ্রামে বসবাসকারি দেড়শো পরিবার হারিয়ে ফেলেছে শেষ সম্বলও। বন্যা পরিস্থিতির তৈরির জন্য বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন , বিজেপি রাজ্যে হেরে গিয়েছে। তাই গায়ের জোরে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করে সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে । কিন্তু গ্রামের নিরীহ মানুষদের পাশে রাজ্য সরকার রয়েছে। তাদের বিপদের দিনে সবরকমের সাহায্য রাজ্য সরকার করবে এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। জল নামার পরে গ্রামে পৌঁছে যান বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ করিম খান। প্রাথমিকভাবে বন্যায় সর্বহারা মানুষদের হাতে তুলে দিয়েছেন খাবার, ত্রিপল, রান্নার বাসন পত্র, জামা কাপড়, সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।

 

Latest article