নয়াদিল্লি : বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ঘিরে সরব রাজধানী। বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাট এবং সাক্ষী মালিকের মতো দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীররা রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (ডব্লিউ এফ আই) সভাপতি তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ভারতের মহিলা কুস্তিগীররা একযোগে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনায় চাঞ্চল্য সর্বস্তরে। কিন্তু এই ঘটনাই প্রথম নয়। তথ্য বলছে, মোদি জমানায় ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে যৌন হয়রানির ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
আরও পড়ুন-ঋষির জরিমানা
ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের আগে সম্প্রতি প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় এবং হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রী সন্দীপ সিং যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। গত দশ বছরে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই) এর সঙ্গে যুক্ত ৪৫ জন কোচ ও অন্যান্য পদাধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এদের সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও সুবিদিত। ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ আনন্দেশ্বর পাণ্ডে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত। ২০২২-এর জুলাইয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের সহকারী কোচ অ্যালেক্স অ্যামব্রোসকে ইউরোপ সফরের সময় যৌন অসদাচরণের অভিযোগের ওঠে। অভিযোগের চাপে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) অ্যামব্রোসকে ফেরত পাঠায়। ২০২২ সালের জুনে একজন মহিলা সাইক্লিস্ট প্রধান কোচ আর কে শর্মার বিরুদ্ধে স্লোভেনিয়া সফরে যৌন হয়রানি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ এনেছিলেন।
আরও পড়ুন-স্বেচ্ছামৃত্যুর অধিকার কেন্দ্র কেন দায় চাপাচ্ছে, প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট
তিনি বলেছিলেন, শর্মা তাঁকে একই ঘরে থাকতে বাধ্য করেছিলেন। মামলা দায়েরের পর অভিযুক্ত কোচের চুক্তি বাতিল করা হয়। ২০২১-এর জুলাইয়ে আরও সাতজন মহিলা ক্রীড়াবিদ তামিলনাড়ুর ট্র্যাক এবং ফিল্ড কোচ পি নাগরাজনের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ করেছিলেন। পি নাগরাজনের বিরুদ্ধে যৌন শোষণেরও অভিযোগ ওঠে। ১৯ বছর বয়সি এক অ্যাথলিটই প্রথম নাগরাজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছিলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় কোচের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের করেন এক মহিলা ক্রিকেটার।২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে একজন মহিলা জিমন্যাস্ট তাঁর কোচ মনোজ রানা এবং সহকর্মী জিমন্যাস্ট চন্দন পাঠকের বিরুদ্ধে রাজধানীর ইন্দিরা গান্ধী স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রশিক্ষণ শিবিরে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ করেছিলেন।
আরও পড়ুন-প্রস্রাবকাণ্ড চেপে যায় এয়ার ইন্ডিয়া
ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনও যৌন হয়রানির ঘটনা থেকে মুক্ত নয়। ২০২২ সালের মার্চ মাসে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ আনন্দেশ্বর পাণ্ডের বিরুদ্ধে মহিলা হ্যান্ডবল খেলোয়াড় সীমা শর্মা ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন। পাণ্ডে হ্যান্ডবল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (এসএফআই) সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। সব মিলিয়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে বারবার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন মহিলা ক্রীড়াবিদরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিজেপি সরকার অভিযোগ ধামাচাপা দিয়ে অভিযোগকারীকে টার্গেট করতে ব্যস্ত।