তৃণমূল পরিচালিত মা-মাটি-মানুষের সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে বিগত ১০ বছরে গ্রামীন অর্থনীতি ও মহিলাদের স্বনির্ভর করার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পর থেকেই এই বাংলা মাথা উঁচু করে রয়েছে তার নিজস্ব হস্তশিল্প ও শিল্পীদের মধ্যে দিয়ে। গ্রামীণ হস্তশিল্পীদের উন্নতি মানে পরোক্ষে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা অনুসারে দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় দক্ষিণাপণের পাশে পড়ে থাকা জমিতে শুরু হয়েছিল একটি হস্তশিল্প কেন্দ্র নির্মাণের কাজ। ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর ঠিক আগে এখানেই সূচনা হয় “সৃষ্টিশ্রী”-র।
আরও পড়ুন- এগিয়ে বাংলা, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ প্রাপকদের হারে শীর্ষে রাজ্য
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আনন্দধারা প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে যে সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করছে, এখানে মিলবে তাদের নির্মিত সামগ্রী। শাড়ি, ব্যাগ, গয়না, ঘর সাজানোর জিনিস, মসলন্দ মাদুর, ছো মুখোশ, ডোকরা, তামার প্রদীপ, বাবুই ঘাস ও খেজুর পাতার ম্যাট-ট্রে, বেত-কাঠ-কাপড়-পাথর-মোষের শিং-ঝিনুক-গালা-শোলার জিনিস থেকে শুরু করে তুলাইপাঞ্জি, কালোনুনিয়া চাল, আচার, গয়না বড়ি, আমসত্ত্ব, ঘি, নাড়ু মায় নুডলস— সবই রয়েছে এখানে। রয়েছে ক্যাকটাস, ফুল-ফলের গাছ, অর্কিড, জৈব সার, বাহারি ফুলের টবও। দশ টাকার ‘সিড পেন’ ব্যবহারের পর মাটিতে ফেলে দিলে তা থেকেই জন্ম নেবে গাছ, বিক্রি হচ্ছে খুব।
এবারও পূজার প্রায় দেড় মাস আগে ঢাকুরিয়া সৃষ্টিশ্রী-তে তিন দিনের বিশেষ সেল শুরু হল। শনিবার ছিল তার শুভ উদ্বোধন। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে এই সেলের উদ্বোধন করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। উদ্যোক্তারা সৃষ্টিশ্রী সেলে আসার জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। কালীপুজোর আগে দেরী না করে চলে যান ঢাকুরিয়া দক্ষিণাপন পাশে সৃষ্টিশ্রী। সরকারি এই বিপণন কেন্দ্রে রয়েছে বাংলার মা-বোনেদের হাতি তৈরি রকমারি শাড়ির সম্ভার। আসল বালুচরি কাঁথা স্টিচ-সহ সিল্ক ও তাতের শাড়ি। তুলাইপঞ্জি চাল। সেল্ফ হেল্প গ্রুপের তৈরি হস্তশিল্প সব পাবেন এক ছাদের তলায়।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সারা বাংলার শিল্পীরা এখন এক ছাদের তলায়। এখানেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছে শিল্পীদের।যাতায়াত খরচও দিচ্ছে সরকার। তিনদিনের সেল ছাড়াও এ ভাবেই চলবে বছরভর, সৃষ্টিশ্রীতে স্থান পাবেন সকলেই। নতুন ভাবনা, সৃষ্টি ও সৃজনশীলতায় বাংলার গ্রামীণ শিল্পকে বিশ্বের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছে সৃষ্টিশ্রী।