দুলাল সিং বালুরঘাট: দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে কুমারগঞ্জের সভায় স্মৃতির সাগরে ডুব দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় দফার প্রচারে প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের সমর্থনে রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের সভামঞ্চে যুব বয়সের রাজনীতির স্মৃতি উস্কে আবেগে ভাসলেন নেত্রী। এদিন মঞ্চে উপস্থিত কুমারগঞ্জে গুলিতে নিহত একসময়ের রাজনৈতিক সতীর্থ পার্থ সিংহরায়ের মাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন তিনি, কৃতজ্ঞতা জানান। নেত্রী বলেন, আজ কুমারগঞ্জের সভায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন পার্থ সিংহরায়ের মা। তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলে অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পরে গেল। আইনজীবীর ভূমিকায় আদালতে লড়াই করে কীভাবে পার্থ সিংহরায়ের হত্যায় ধৃত কুমারগঞ্জের শতাধিক যুবকের জেলমুক্তির মূল কাণ্ডারি হয়ে উঠেছিলেন নেত্রী, সেই কাহিনিই শোনালেন এদিন।
আরও পড়ুন-৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে টানা চল্লিশের উপরেই পারদ
স্মৃতি উস্কে নেত্রী বলেন, তখন যুব রাজনীতি করতাম। সেইসময় কুমারগঞ্জে গুলি চলল, পার্থ সিংহরায় মারা গেল। এখানকার সব ছেলেমেয়েদের জেলে পুরে দেওয়া হল। বালুরঘাটে সেদিন বনধ ছিল। আমি সেদিন রাতেই বালুরঘাটে আসতে আসতে বিপ্লবদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, এখানে সবচেয়ে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কে আছে? তখন রাত সাড়ে দশটা-এগারোটা বাজে। বিপ্লবদা বলল, শঙ্কর চক্রবর্তী। আমি বললাম, চলুন তাঁর বাড়ি যাওয়া যাক। একজন সিনিয়র আইনজীবী তো দরকার, নাহলে ছাত্র-ছাত্রীগুলো মুক্তি পাবে কীভাবে? কিন্তু রাত তখন ১১টা বাজে। আমি তখন বললাম, পাঁচিল টপকান। আবার পাঁচিল টপকালে যদি চোর-ডাকাত ভাবে? শেষপর্যন্ত পাঁচিল টপকে শঙ্করদার বাড়িতে ঢুকে তাঁকে রাজি করালাম। পরেরদিন বালুরঘাটের আর এক আইনজীবী সুভাস চাকীকে বললাম, আমাকে একটা গাউন দাও। আমি নিজে আইনজীবী, কিন্তু গাউন তো আমি নিয়ে ঘুরি না। ও আমাকে একটা গাউন এনে দিল। সেদিন পুরো আদালত বন্ধ করে রেখে দিয়েছিল বিজেপি। এদিকে ছাত্র-ছাত্রীগুলো যে জেলে পচছে সেদিকে ওঁদের কোনও হুঁশ নেই। তখন জোর করে গেট খুলিয়ে ভিতরে ঢুকে আমরা বালুরঘাটের সমস্ত আইনজীবীরা মিলে একসঙ্গে সব ছাত্র-ছাত্রীদের মুক্তি দিই। আমি সেদিনটা কোনওদিন ভুলব না। আমি সেই গাউনটা আজও যত্ন করে রেখে দিয়েছি।