সময়ের মূল্য অনেক। তা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। সদ্য শেষ হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর কয়েক দিনের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিকও শেষ হয়ে যাবে। তখন বর্তমান পরীক্ষা শেষ হওয়া ছাত্রছাত্রীদের হাতে থাকবে পুরো দু-তিন মাসের অখণ্ড ছুটি। কাজেই এই পুরো ছুটির সময়টায় পড়াশোনার ছুটি থাকলেও সময় থমকে থাকে না। কাজেই বইতে পড়া সেই লাইন কটি অবশ্যই যেন আমরা ভুলে না যাই। ‘সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের ন্যায়’…। মুনি ঋষি থেকে সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতায়ও হা-হুতাশ ফুটে ওঠে এই চলে যাওয়া সময়ের জন্য।
আরও পড়ুন-অন্তরঙ্গ ছবি নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া বিজেপি বিধায়কের কুকীর্তি
এই সময় চলে গেলে আর কোনওদিন ফিরে আসে না। সমুদ্রের ঢেউ ফিরে ফিরে আসে, বাতাস থমকে গেলেও ফিরে আসে, চাঁদ সূর্য প্রতিদিন অস্ত যায় ও প্রতিদিন ফিরে আসে। কিন্তু যা ফিরে আসে না তা হল সময়। তাই সময়ের মূল্য অন্য সব কিছুর থেকে বেশি। অতএব সদ্য শেষ হওয়া পরীক্ষার্থীদের কাছে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে হাতে পাওয়া এই সময়টুকুকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের উত্তরণের কথা ভেবে আরও ভালেভাবে নিজের জীবনের ভিত শক্ত করে নিতে পারলে আখেরে ছাত্রছাত্রীদেরই লাভ। এই কঠিন প্রতিযোগিতার বাজারে মূল যে শব্দটি বিশ্বময় কাজের দুনিয়ায় ঘোরাফেরা করছে তা হল দক্ষতা। যে-কোনও বিষয়ে যে বেশি দক্ষ কাজের বাজারে তার মূল্যও অনেক।
আরও পড়ুন-পুরুলিয়ায় বন-ক্যামেরায় আবার চিতাবাঘ
অতএব বর্তমান দুনিয়ায় কঠিন প্রতিযোগিতার বাজারে টিঁকে থাকতে গেলে নিজেকে দক্ষ করে তুলতেই হবে। আর সেই দক্ষতা আসবে তোমার নিজের প্রচেষ্টা ও আগ্রহ থেকেই। তাই এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ কিছু শিখে নিয়ে নিজের দক্ষতা বাডিয়ে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।। যাতে তোমার স্বপ্ন সফল হতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ সুগম হয়। যার যে দিকে আগ্রহ আছে সে সেই বিষয়ে কোনও কোর্স বা হাতেকলমে কোনও পাঠ নিয়ে নিতে পারলে এক্সট্রা ক্যারিকুলাম হিসেবেও কাজে লাগতে পারে ভবিষ্যতে। কারও যদি ছবি আঁকার নেশা থাকে সে গ্রাফিক ডিজাইন শিখে নিতে পারলে খুবই কাজে আসবে। এবং সেই শেখা কাজই তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে কাজের দুনিয়ায়। শুধু গ্রাফিক্স ডিজাইনই নয়, হাতে কলমে শিক্ষার অসংখ্য পথ এখন সামনে খুলে গেছে। কম সময়ে সঠিকভাবে শিক্ষা নিতে পারলে নিজেই কাজ করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। বিশেষ করে সরকারি চাকরির এই কঠিন প্রতিযোগিতার দিনে।হাতে কলমে কাজ শিখে নিজেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর রাস্তা তৈরি করে নিতে পারবে।
আরও পড়ুন-দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে দেখার করার কর্মসূচি নেই, জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দিন পালটেছে। দ্রুত পালটাচ্ছে। পড়াশোনার ক্ষেত্র পালটেছে। বৃত্তিমূলক বা ব্যবহারিক শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হয়েছে সদ্য তৈরি হওয়া নতুন শিক্ষানীতিতে। সেই সঙ্গে নিজের সুদৃঢ ভবিষ্যৎ গডে তোলার ভাবনাও পালটে গেছে বর্তমান দিনে। বর্তমানে সজাগ ছাত্রছাত্রীদের সামনে অনেক নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। হাতে কলমে কোনও বিষয়ে শিখে নিয়ে নিজের দক্ষতা তৈরির অনেক পথ আজ উন্মোচিত। শুধু সেই পথ সঠিকভাবে নিজেকে বাছাই করে নিতে হবে বা শিক্ষকদের কাছে পরামর্শ নিয়ে এগোতে পারলে এই সময়টাকে অত্যন্ত সুচারুরূপে কাজে লাগানো যেতে পারে। দু তিন দশক আগেও ছাত্রছাত্রীদের কাছে এমন সুযোগ ছিল না। তারা মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর এই সময়ে কেউ কেউ শুধুমাত্র টাইপ বা শর্টহ্যান্ড শিখতেন।
আরও পড়ুন-যুদ্ধের জেরে ইউক্রেন থেকে আসা পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
যদি কোনও টাইপিস্টের চাকরি পাওয়া যায় বা এক্সট্রা কারিকুলাম হিসেবে কাজে লাগে। কারণ সবার মনেই একটাই ভাবনা ছিল সাধারণ পড়াশোনার পর একটা ডিগ্রি নিয়ে সরকারি চাকরির দিকেই মনোনিবেশ করা। সরকারি চাকরির পাশাপাশি আজকের ধারণা অনেক পালটে গেছে। গোটা বিশ্বে আইটি সেক্টর বা তথ্যপ্রযুক্তির মতো নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
টাইপ শিখে চাকরি আজ অনেকেই এমন কথা শুনলে অবাক হবে বা হাসবে। কারণ বর্তমানে ছোটবেলা থেকেই শিশুদের হাতে কম্পিউটার, হাতের কাছে অনেক কিছু শেখার সুযোগ। বর্তমান দিনের শিশুরা ক্লাসের পাঠ নিতে নিতেই কম্পিউটারের মাধ্যমে অনেক কিছু বিষয়ে শিখে নিতে পারে। তাই নতুন করে তাদের আর পরীক্ষা দেবার পর শুধুমাত্র চাকরির জন্য টাইপ শিখতে হয় না। তার বদলে শিশুবেলা থেকেই অনেকেই অনেক বিষয়ে শিখতে শিখতেই বড় হচ্ছে। এখন যে-কোন শিশুর মুখেই গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যাডবি, টুইটার, মেসেঞ্জারের মতো শব্দ ঘুরপাক খায়।
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার স্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধন করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
অতএব পুরনো দিনের সেই ভাবনা বদলে ফেলে বর্তমানে হাতের কাছে অনেক কিছু শিখে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সময়কে কাজে লাগিয়ে শিখে নিতে পারলে শিখে নিতে পারলে আর যাইহোক কর্মহীন ‘বেকার’ তকমা নিয়ে হীনম্মন্য হয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না। নিজেই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর গোরব অর্জন করা সম্ভব।