প্রতিবেদন : আফগানিস্তানে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রবল খাদ্যসংকট। তালিবান শাসনে যে এমনটা হতে পারে তা নিয়ে আগেই সতর্কবার্তা দিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘ। তালিব শাসনের ১০০ দিন পূর্তিতে ঠিক সেটাই বাস্তবে পরিণত হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। শীতের সঙ্গেই বাড়ছে প্রবল খাদ্যাভাব। অনেক বাবা মা তাদের সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে একবেলা খেয়ে থাকছেন কেউবা সারাদিনে এক কাপ চা খেয়েই দিন গুজরান করছেন।
১০০ দিন পূর্ন করেছে আফগানিস্তানের তালিবান সরকার, কিন্তু কিছু উন্নতি তো হয়েইনি, উল্টে খবরের শিরোনামে এসেছে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, ফতোয়া। উল্টোদিকে দেশের মানুষ যে ক্রমশ বিপদের মুখে চলে যাচ্ছে সেদিকে নজর নেই তাদের। ৩৫ বছরের জারঘুনা জানিয়েছেন, ‘আমরা হয় শুধুমাত্র রাতের খাবার খাই নয়তো বা সারাদিন শুধু চা খেয়েই কাটিয়ে দিই। আসলে নিজেরা যদি না খাই চলে যাবে, কিন্তু আমাদের সন্তানরা খাবারের জন্য কাঁদছে, এটা দেখতে পারবো না’। তার আট বছরের ছেলে জানিয়েছে, ‘আমরা কখনও ভাত ,কখনও রুটি খাই। মাংস , ফল এসব খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে’।
আরও পড়ুন : মতিঝিলে সার্কিট ট্যুরিজম
আফগানবাসী জানাচ্ছে , তেল ময়দা থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম এতো বেড়ে গিয়েছে যে কেউ দান করলে তবেই এইসব খাবার জোটে ,না হলে অধিকাংশ দিন অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের। অনেকে খরচ চালাতে না পেরে সন্তান বিক্রি করে দিচ্ছে এমন খবরও সামনে এসেছে। তালিবান ২.০ শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত আফগানদের এটাই প্রাপ্তি।
প্রসঙ্গত , রাষ্ট্রসংঘ আশঙ্কা করে জানিয়েছিল আফগানিস্তানের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় ২ কোটি ২৮ লাখ মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই বছর শীতে লাখ লাখ আফগানকে না খেয়ে থাকতে হবে। এছাড়া ৫ বছরের কম ৩২ লক্ষ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগতে পারে বলেও সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। এও বলা হয়েছিল , চিকিৎসা না পেলে তীব্র অপুষ্টির কারণে ১০লক্ষ শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আশঙ্কা যে বাস্তব হওয়ার দিকে এগোচ্ছে তালিবান শাসনের ১০০ দিন পূর্তিতেই তা স্পষ্ট। আগামী দিনে পরিস্থিতি সামলাতে প্রতি মাসে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন হতে পারে কিন্তু ওই পরিমাণ অর্থ কে দেবে? তার সদুত্তর নেই।