প্রতিবেদন : অশান্ত আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবারও একাধিক জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবর আসছে। কাবুল-সহ প্রায় গোটা দেশ নিজেদের দখলে এলেও সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা জারি রয়েছে তালিবানদের। সাধারণ মানুষের উপর চাপ তৈরি করতে শূন্যে গুলি ছোড়া থেকে হুমকি, জুলুমবাজি কিছুই বাদ যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: শুক্রবার বিজেপি বিরোধী দলগুলি একযোগে করবে ঐতিহাসিক বৈঠক
বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে আফগান পতাকা নামিয়ে তালিবান জঙ্গিরা নিজেদের সংগঠনের পতাকা লাগিয়ে দেয়। তবে, তালিবানি রক্তচক্ষু এড়িয়ে বহু জায়গায় আফগান জনতা স্বতস্ফূর্তভাবে নিজেদের দেশের জাতীয় পতাকা তুলেই দেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করেছেন। জালালাবাদে দেশপ্রেমী জনতার উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায় তালিবান জঙ্গিরা। এতে প্রাণ হারান দু’জন সাধারণ মানুষ।
তালিবানদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত তীব্র হওয়ায় ভাবমূর্তি বদলের চেষ্টা শুরু করেছে তালিবানরা। তবে তালিবানদের মুখে শান্তির বাণী বিশ্বাস করছেন না খোদ আফগান জনগণ। উল্টে বেশিরভাগ মানুষই যে কোনওভাবে দেশ ছাড়তে মরিয়া। তালিবান সংগঠনের শীর্ষকর্তারা শান্তি রক্ষার আশ্বাস দিলেও উপরতলার সেই বার্তা মানছে না নিচুতলার মেশিনগানধারী তালিবান যোদ্ধারাই। বৃহস্পতিবারও বিক্ষিপ্তভাবে বহু জায়গা থেকে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের খবর আসছে। আতঙ্কে শুনশান কাবুল শহর। তালিবানরা মানুষকে নিরাপদে থাকার আশ্বাস দিলেও আফগান জনতা তা বিশ্বাস করতে পারছেন না। সে কারণেই অব্যাহত রয়েছে দেশ ছাড়ার প্রবণতা।
এদিকে তালিবানদের সঙ্গে সরকারের প্রাক্তন শীর্ষ কর্তাদের আলোচনাকে স্বাগত জানালেন সেদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি। এই মুহূর্তে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে রয়েছেন ঘানি। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করা হয়েছিল, ঘানি বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। ওই অভিযোগও উড়িয়ে দিয়ে ঘানি বলেছেন, দেশ ছাড়ার সময় তিনি কোনও অর্থ সঙ্গে নিয়ে যাননি। গত রবিবার তালিবানরা দেশের ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম জনসমক্ষে এলেন ঘানি। নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় ঘানি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন নির্বাসনে থাকতে চান না। যত শীঘ্র সম্ভব তিনি দেশে ফিরে আসতে আগ্রহী। রক্তক্ষয় ও হিংসা এড়াতেই তিনি দেশ ছেড়েছেন। তবে, দেশের মানুষের হাতেই যাতে আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা থাকে তার জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’এর ফর্ম তোলা নিয়ে জেলাশাসকদের পরামর্শ দিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী
বুধবারই আমিরশাহি জানায়, মানবিক কারণেই তারা ঘানিকে সেদেশে আশ্রয় দিয়েছে। দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও সরকারের শান্তি দূত আবদুল্লা আবদুল্লার সঙ্গে তালিবানরা শান্তি আলোচনায় বসেছে। এই আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ঘানি। যদিও আফগানিস্তানে আপাতত গণতন্ত্র ফিরছে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। সংগঠনের শীর্ষ নেতা ওয়াহিদুল্লা হাসমি জানিয়েছেন, দেশের শাসন ক্ষমতা পরিচালনার জন্য একটি কাউন্সিল বা পরিষদ গঠন করা হবে। ওই কাউন্সিলের যাবতীয় কাজ দেখভাল করবেন সংগঠনের প্রধান নেতা হিবাতুল্লা আখুনজাদা। কাউন্সিলের প্রধান হিসাবে তিনি দেশের প্রেসিডেন্টের সমতুল্য হবেন। হাসমি এদিন দেশের প্রাক্তন পাইলট ও সেনাদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।