প্রতিবেদন: ‘‘তোকে মারব না। যা, মোদিকে গিয়ে বল।’’ কর্নাটক থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী মঞ্জুনাথ রাওকে চোখের সামনে গুলি করে হত্যা করে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার স্ত্রী পল্লবীকে একথাই বলল ঘাতক এক জঙ্গি। সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন পল্লবী। বললেন, ৩-৪ জন মিলে গুলি চালাল। কোনওরকমে বেঁচে গেলাম আমি এবং আমার ছেলে অভি। নাম জিজ্ঞাসা করে গুলি চালল ওরা।
ভরা মরশুমে ভূস্বর্গে জঙ্গিরা হামলার ছক কষেছিল অনেক আগেই। পর্যটক সেজেই জঙ্গিরা মিশে গিয়েছিল সৌন্দর্যপিপাসুদের ভিড়ে। নিখুঁতভাবে রেইকি করে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের কাছে সেগুলো পৌঁছে দিয়েছিল তারা। পহেলগাঁওয়ে পাহাড় থেকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে তারা যেভাবে মঙ্গলবার গুলি চালিয়েছে তাতে নিখুঁত পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। প্রাথমিক তদন্তে এটাই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন-১০ তৃণমূল সাংসদ, নেতাকে সমন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তীব্র ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর
এদিন প্রায় ৬-৭ জন জঙ্গি পর্যটকদের উপর গুলি চালায় বলে খবর। কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এর আগে জঙ্গিরা কিন্তু পর্যটকদের উপরে কখনও সেভাবে হামলা চালায়নি। কারণ তারা জানে, জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতি পুরোটাই নির্ভরশীল দেশি-বিদেশি পর্যটকদের উপর। কিন্তু এবারে তারা পর্যটকদের টার্গেট করল, গবেষণার বিষয় সেটাই। এই হামলা যে ভূস্বর্গের পর্যটন শিল্পের উপর সরাসরি আঘাত, তা মেনে নিচ্ছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরাই। কারণ মঙ্গলবারের ঘটনা নিঃসন্দেহে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকদের মনে। লক্ষণীয়, মূলত রাজস্থান থেকে আসা মানুষজনই এদিনের জঙ্গি হামলার শিকার।
এদিকে জঙ্গি হামলার পরেই এদিন এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী হল পহেলগাঁও। এক মহিলা কাঁদতে কাঁদতে উদ্ধারকারীদের কাতর আর্তি জানাচ্ছিলেন, আমার স্বামীর মাথায় গুলি করেছে। আমার স্বামীকে বাঁচান, প্লিজ। পুণে থেকে সস্ত্রীক এসেছিলেন সুধীর গানবোটে। গুলিতে জখম হয়েছেন তিনি। কিন্তু তারপর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর।