প্রতিবেদন : বঙ্গ বিজেপি নেতাদের মুখে ঝামা ঘষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar- Droupadi Murmu) প্রকল্পকে সেরার শিরোপা দিল কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী ৭ জানুয়ারি দিল্লিতে রাজ্যের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই রাজ্যের একাধিক জনমুখী প্রকল্পকে সেরার তকমা দিয়েছে কেন্দ্র। এরাজ্যের অতৃপ্ত বিজেপি নেতারা বাংলার প্রাপ্য আটকাতে যতই চেষ্টা করুন না কেন, কাজের প্রশ্নে এরাজ্যের সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে সেরার সেরা পুরস্কার দিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়, রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ রায় ও পুলক রায় এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রতিক্রিয়ায় একদিকে যেমন এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়েছেন, একইসঙ্গে একহাত নিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতাদেরও।
সোমবার কেন্দ্রের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar- Droupadi Murmu) প্রকল্প এবছর পাচ্ছে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পুরস্কার।
আরও পড়ুন-রেলের উচ্ছেদ নোটিশে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা
সরকারি প্রকল্প এবং পরিষেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারকে এভাবে মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা আগেই প্রশংসিত হয়েছে নানা মহলে। এবার সেই দুয়ারে কর্মসূচিকেই ভারতসেরার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্র।
সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার ৬৩টি জনমুখী কর্মসূচি ও পরিষেবা বাংলার সাড়ে ৮ কোটি মানুষের কাছে ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো অভিনব পদ্ধতিতে পৌঁছে দিচ্ছে। এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এমন উন্নয়নের ধারাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার প্লাটিনাম অ্যাওয়ার্ডে রাজ্য সরকারকে ভূষিত করায় আমরা খুশি। আশা করব, দুর্মুখেরা এখন কিছুদিন বিশ্রাম নেবেন। মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, বামফ্রন্ট সরকারকে বলা হত কোমায় চলে যাওয়া সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন গতিতে, স্বচ্ছভাবে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন রাজ্যকে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রশাসন জেলা থেকে শুরু করে ব্লক স্তরে পৌছে গিয়েছে। দুয়ারে সরকারের পরিষেবা তারই অঙ্গ। দেরিতে হলেও কেন্দ্রীয় সরকার সত্যিটাকে মেনেছে। এজন্য ধন্যবাদ। মন্ত্রী পুলক রায়ের কথায়, দুয়ারে সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প। আর এই প্রকল্পকে স্বীকৃতি জানিয়েছে বাংলার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলা জুড়ে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলেছে। পরিষেবা পাচ্ছেন মানুষ। বিরোধীদের যোগ্য জবাবও দিয়েছেন বাংলার মানুষ। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারও মানল দুয়ারে সরকারের সাফল্যকে। ডাঃ শান্তনু সেন বলেছেন, নির্বাচনের আগে অনেকেই দুয়ারে সরকারকে যমের দুয়ারে বলে কটাক্ষ করেছে। করেছেন অপপ্রচারও। এবার তাঁদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পুরস্কৃত করল রাজ্য সরকারকে। বলা ভাল, বাধ্য হল স্বীকৃতি দিতে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্পকে দেশের সেরার পুরস্কার দিচ্ছে কে? কেন্দ্রীয় সরকার। এখানে যে চার আনার বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক কুৎসা করে তারা বুঝুক যখন কাজের প্রশ্ন আসছে তখন বিজেপি নেতাদের মুখে ঝামা ঘষে বাংলার সরকারকেই সেরার শিরোপা দিচ্ছে। বাংলা আজ যা ভাবে ভারতবর্ষ কাল তা ভাবে।
২০২০ সালে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে সরকারি পরিষেবার সুযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের বাড়ির কাছে পৌঁছে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের আওতায় এখনও পর্যন্ত ৫ দফায় ক্যাম্প করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। এবং দুয়ারে সরকার শিবির থেকে অন্তত সাড়ে ৬ কোটি মানুষ পরিষেবা পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, দুয়ারে সরকার কর্মসূচি কেন্দ্রের পুরস্কার পাবার আগেই আন্তর্জাতিক স্তরে ইউনিসেফের প্রশংসা পেয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় জায়গা করে নিল, তা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।