প্রতিবেদন : আবারও নিজেদের মর্জিমতো পুলিশ আইনে বদল এনে সংসদে বিল পাশ করাতে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি সরকার৷ এবং প্রস্তাবিত এই বিলে যে ধরনের ধারা ও কড়া ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তা দেশের নাগরিকদের পক্ষে বিপজ্জনক৷ কেন্দ্রের আনা এই খসড়া বিলের বিরোধিতা করে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বুধবার বিকেলে তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন যে পুলিশ বিলের পরিবর্তন ঘটাতে চাইছে তা দেশের নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ক্ষতিকারক৷
আরও পড়ুন-ভয়াবহ অবস্থা যোগীরাজ্যে, নাবালিকার উপর অত্যাচার, গণধর্ষিতার হাত-পা বাদ দিতে হল
আগের কয়েকটি ধারা তুলে দিয়ে নতুন করে ভারতীয় নয়া সংহিতার যে রূপ বিজেপি সরকার দিতে চাইছে তা দেশের জনগণের ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর৷ এই আইন বলবৎ হলে দেশের মানুষের প্রতি অন্যায় ও অবিচারের শেষ থাকবে না৷ পুলিশ যাকে–তাকে যখন খুশি ডিটেইন, গ্রেফতার করতে পারবে৷ প্রয়োজন ছাড়া আটকেও রাখতে পারবে৷ অবিলম্বে দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সর্বস্তরের নাগরিকদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ তিনি সমাজের বুদ্ধিজীবী মহল, আইনজীবী মহল ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে এই খসড়া বিল পড়ে দেখতে অনুরোধ করেছেন৷ এবং গণতন্ত্রের পক্ষে এই প্রস্তাবিত পুলিশ আইন কতটা ক্ষতিকর তা বুঝতে বলেছেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা এর প্রতিবাদ করবেন৷ স্ট্যান্ডিং কমিটিতে যখন এই খসড়া বিল নিয়ে আলোচনা হবে তখনও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রতিবাদ জানানো হবে৷ দলনেত্রীর কথায়, আইনের পরিবর্তন ও পরিমার্জন হওয়া উচিত অভিজ্ঞতার আলোয়৷ দেশের মানুষের ভালর জন্য৷ কিন্তু ঔপনিবেশিক চিন্তাধারা নিয়ে এই ধরনের আইন তৈরি করা দেশের মানুষের পক্ষে, তাঁদের স্বাধীনতার পক্ষে, তাঁদের চিন্তাধারার পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক৷
আরও পড়ুন-বিরোধী দলনেতার প্রতিহিংসার রাজনীতি নিয়ে এক্সে সরব তৃণমূল কংগ্রেস
এর আগেও একাধিক জনবিরোধী বিল গায়ের জোরে সংসদে পাশ করিয়ে নিয়েছে বিজেপি সরকার৷ শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে বিল পাশ করানো আর সমাজের সর্বস্তরের মতামত নিয়ে সংসদে আলোচনা করে প্রকৃত অর্থে দেশের ভালর জন্য কোনও বিল আনাটাকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বলা হয়৷ কিন্তু মোদি সরকার গত ৯ বছরে যেভাবে শুধুমাত্র সংখ্যার জোরে একের পর এক জনবিরোধী বিল পাশ করাতে চেয়েছে বা করিয়েছে তার একাধিক নজির রয়েছে৷ তা নিয়ে প্রতিবাদও কম হয়নি৷ এবারও উৎসবের মরশুম মিটলে এই খসড়া বিলের বিষয়টি যখন সংসদে উঠবে এবং স্ট্যান্ডিং কমিটি আলোচনা হবে সেখানে তৃণমূলের সদস্যরা প্রতিবাদ তো করবেন, একইসঙ্গে ২০২৪–এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি সরকার একনায়কতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে এই খসড়া বিল তার আরও একটি প্রমাণ৷