সংবাদদাতা, হাওড়া : কখনও কাপলিং খুলে ট্রেনের একাধিক বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। কখনও চলন্ত ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে লোকাল ট্রেন। প্রায়শই এরকম একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। প্রাণ হাতে করে আতঙ্কের মধ্যে ট্রেন সফর করছেন যাত্রীরা। সেরকমই বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ মাজু স্টেশনে ঢোকার আগে আপ হাওড়া-আমতা লোকাল ট্রেন জগৎবল্লভপুরের যাদববাটি এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ল। চলন্ত ট্রেনের ৩টি বগি লাইনচ্যুত হল।
আরও পড়ুন-মডেল স্টেশন তালিকা থেকে বারাসত বাদ পড়ায় প্রতিবাদ
গাড়ির গতি কম থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে বিকট শব্দে ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় তাড়াতাড়ি করে হুড়োহুড়িতে নামতে গিয়ে অনেক যাত্রী জখম হন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। তার মধ্যে রবীন বাগ নামে জগৎবল্লভপুরের পোলগুস্তিয়ার বাসিন্দা এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতাল হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দুর্ঘটনাস্থলে যান জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়। ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ। এরপর আহত যাত্রী রবীন বাগকে দেখতে হাওড়া জেলা হাসপাতালে যান মন্ত্রী পুলক রায়। তাঁর সঙ্গে বিধায়ক সীতানাথ ঘোষ ছাড়াও হাওড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙ্গালিয়া ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও ছিলেন। আহতদের পরিবারের লোকের হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে পাঠানো ফল তুলে দেন মন্ত্রী পুলক রায়।
আরও পড়ুন-জিতেন্দ্রপত্নী চৈতালির আগাম জামিন খারিজ
সেইসঙ্গে আহত যাত্রীর চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্বভার নেয় রাজ্য সরকার। মন্ত্রী পুলক রায় দাঁড়িয়ে থেকে আহত ব্যক্তিকে এসএসকেএমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় জানান, ‘রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষণ আরও ভালভাবে করতে হবে। এই ধরনের ঘটনার আর যাতে না ঘটে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিক রেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে আহত যাত্রীর চিকিৎসার সমস্ত দায়দায়িত্ব রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে। আহত ব্যক্তির পরিবারের পাশে আমরা আছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় পরিস্থিতির খোঁজ নিচ্ছেন। আমরা সবাই আহত যাত্রীর পরিবারের পাশে রয়েছি।’ আহত যাত্রীর আত্মীয় তপন সামন্ত জানান, ‘দুর্ঘটনার পর রেল থেকে আমাদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি। কিন্তু রাজ্য সরকার আমাদের সবরকম সাহায্য করছে। কলকাতায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নিজে আহত রবীনের জন্য প্রচুর ফল পাঠিয়েছেন। এই দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া-আমতা শাখায় দীর্ঘক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্যকুমার চৌধুরি জানান, ‘দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’