প্রতিবেদন : মণিপুরের বিজেপি সরকার এমনিতেই ঘরোয়া দ্বন্দ্বে জর্জরিত। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কাজকর্মে তীব্র অসন্তুষ্ট রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়করা। ইতিমধ্যে বিজেপির বেশ কয়েকজন বিধায়ক সরকারি পদ ছেড়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আদিবাসী-উচ্ছেদের বিরোধিতায় তীব্র উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায়।
আরও পড়ুন-ঘৃণাভাষণে মামলা দায়ের করতে হবে, কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যের বিজেপি সরকার সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং জলাভূমির সমীক্ষা ও জরিপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায় মনে করছে, তাদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যেই বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্ত। যে কারণে একাধিক আদিবাসী সংগঠন বীরেন সিং সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি জানায়। কিন্তু সরকার সেই আবেদনের কর্ণপাত করেনি।
আরও পড়ুন-যোগী সরকারের কাছে আতিক খুনের তদন্ত রিপোর্ট চাইল শীর্ষ আদালত
শুক্রবার চূড়াচাঁদপুর জেলায় একটি অত্যাধুনিক জিমের উদ্বোধন করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের। কিন্তু ওই জিম উদ্বোধনের আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখানে তাণ্ডব চলে। চূড়াচাঁদপুর জেলায় নিউ লামকার পিটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই ঘটনা ঘটেছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি মঞ্চে। ঘটনার জেরে এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়ায়। রাজ্য যাতে নতুন করে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য চূড়াচাঁদপুর জেলাজুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী। রাস্তায় চলছে পুলিশের টহলদারি। একই সঙ্গে চূড়াচাঁদপুর জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বেঁধেছে। এমনকী, চূড়াচাঁদপুর জেলার গণ্ডি ছাড়িয়ে আরও কয়েকটি জেলায় এই হিংসার আঁচ ছড়িয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন-যোগী সরকারের কাছে আতিক খুনের তদন্ত রিপোর্ট চাইল শীর্ষ আদালত
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের প্রতিবাদে আদিবাসী ট্রাইব লিডার্স ফোরাম শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চূড়াচাঁদপুর বন্ধের ডাক দেয়। ফোরামের দাবি, কৃষক এবং অন্যান্য উপজাতীয়দের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে সরকারের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের বিজেপি সরকার জনগণের দুর্দশার সমাধানে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। কুকি স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনও ফোরামের সমর্থনে পথে নেমেছে। তাদের অভিযোগ, উপজাতীয়দের প্রতি সৎ মায়ের মতো আচরণ করছে বিজেপি সরকার। মণিপুর সরকার অবৈধ নির্মাণ ঘোষণা করে চলতি মাসের শুরুতে তিনটি গির্জা ভেঙে দিয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এর ফলে প্রবল ক্ষুব্ধ হয়েছে আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়। তারই বহিঃপ্রকাশ বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা।