প্রতিবেদন : ফের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ। রবিবার সকালে হঠাৎই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জের কাছে জগন্নাথপুর মোচপোল সংলগ্ন পশ্চিম পাড়া। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভেঙে যায় আশপাশের আরও কয়েকটি বাড়ি। বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে এক শিশুও রয়েছে। আহত হয়েছেন ৯ জন। আহতদের বারাসত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে জেলা পুলিশের শীর্ষকর্তারা ও দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন-মুম্বই সফরের ‘জলসা’য় চা-চক্রে মুখ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ অমিতাভ-জয়ার
সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ, বারাসতের তৃণমূল সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষদস্তিদার, জেলার আরও দুই মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পার্থ ভৌমিক। ঘটনায় আইএসএফের দিকেই আঙুল তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, আইএসএফের এক পঞ্চায়েত সদস্য আজান আলির মদতেই গত এক মাস ধরে এলাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়া বেআইনি বাজি কারখানাগুলি ফের চালু হয়েছে। রথীন ঘোষও ঘটনায় আইএসএফের দিকেই অভিযোগ তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ঘটনায় মর্মাহত। কথা হয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গেও। ঘটনাস্থলে এসে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই কাজের সঙ্গে আইএসএফ-এর রমজান নামে একটি ছেলে যুক্ত। ওই রমজানই বাজির কারখানা চালায়। ওই বাড়িতে বসে তখন কারখানার শ্রমিকরা খাওয়া-দাওয়া করছিল। সেই সময় বিস্ফোরণ হয়। নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শুভেন্দু নস্কর জানান, ওই এলাকাটির পঞ্চায়েত সদস্য আইএসএফের। এই বাজি কারবারের মূল পান্ডা আইএসএফের সক্রিয় নেতা রমজান আলি ওরফে কালো। তার মদতেই বাজি কারবার এলাকায় বিস্তার লাভ করেছে।
আরও পড়ুন-মুম্বইয়ের হোটেলে আগুন, মৃত ৩, আহত ৫
বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নেমেছে রাজ্য পুলিশের সিআইডি। মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান রাজ্য পুলিশের আইজি দক্ষিণবঙ্গ। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থলে বেআইনি বিস্ফোরক মজুত ছিল বলেই প্রমাণ মিলেছে। ঘটনাস্থলে যান উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী ও বারাসত পুলিশ জেলার এসপি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। তাঁরা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন। এলাকায় আরও অনেক বেআইনি বাজির কারখানার হদিশ পেয়েছে সিআইডি।
আরও পড়ুন-সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুতে সন্তানের চাকরি পাওয়া বংশগত অধিকার নয়, জানাল হাইকোর্ট
এর আগে একাধিক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাজি কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি সবুজ বাজির কারখানা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারপরেও গোপনে অবৈধ ভাবেই এই কারখানা চালাচ্ছিল কিছু বাজি মাফিয়া। শামসুল আলি ওরফে খুদের সঙ্গে তার বাড়িতেই যৌথ ভাবে এই কারখানা চালাত কেরামত আলি। এখানে প্রচুর পরিমাণে বাজিও মজুত করা ছিল। সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটে। এদিনের বিস্ফোরণে ছেলে-সহ কেরামত আলিরও মৃত্যু হয়েছে। এগরা-কাণ্ডের পর গ্রেফতার হয়েছিল কেরামত আলি। জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের বেআইনি বাজির কারবার শুরু করেছিল কেরামত।