হিন্দুধর্মে চার শঙ্করাচার্য একনজরে তাঁদের ভূমিকা

‘শাস্ত্রবিরোধী' যুক্তি দিয়ে রামমন্দির অনুষ্ঠান বয়কট

Must read

প্রতিবেদন : অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন দেশের চার শঙ্করাচার্য (Shankaracharya)। তাঁদের বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাঁদের সিদ্ধান্ত ঠিক নাকি ভুল তা নিয়ে চর্চা কম হচ্ছে না। তবে শঙ্করাচার্য এবং তাঁদের মঠের ইতিহাস অনেক পুরনো। ভারতের চার প্রান্তে চারটি মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আদি শঙ্কর। পুরী, জোশীমঠ, দ্বারকা এবং শৃঙ্গেরী— দেশের চারটি উল্লেখযোগ্য মঠ। আর সেই মঠের প্রধান পরিচালকের দায়িত্বে যাঁরা থাকেন তাঁদের শঙ্করাচার্য বলা হয়। পাশাপাশি হিন্দু ধর্মে তাঁদের গুরুত্ব অসীম। বেদ-উপনিষদের অসামান্য জ্ঞান তাঁদের। মূলত, প্রতিষ্ঠাতা আদি শঙ্করের নাম অনুসারেই চারটি মঠের চার প্রধান শঙ্করাচার্য (Shankaracharya) নামে খ্যাত। তাঁরা মূলত আদি শঙ্করের বার্তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেন।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আদি শঙ্কর প্রতিষ্ঠিত চার মঠের ইতিহাস:

গোবর্ধনপীঠ
আদি শঙ্কর প্রতিষ্ঠিত পুরীর মঠটির নাম গোবর্ধনপীঠ। খ্রিস্টপূর্ব ৪৮৬ অব্দে এই মঠ তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে এই মঠের প্রধান হলেন শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী। পূর্ব ভারতে আদি শঙ্করের মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্ব এসে পড়ে পুরীর গোবর্ধনপীঠের উপরে।
দ্বারকা সারদাপীঠ
আদি শঙ্কর প্রতিষ্ঠিত পশ্চিম মঠের নাম দ্বারকা সারদাপীঠ। গুজরাতের দ্বারকা জেলায় ওই মঠটি স্থাপন করা হয়েছিল। ওই মঠের বর্তমান প্রধানের নাম শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী। দ্বারকায় শঙ্করাচার্যের মঠটি চারতলা। মঠের দেওয়ালে রয়েছে শঙ্করাচার্যের বিভিন্ন ছবি।

আরও পড়ুন-নির্বাচনের আগে এজেন্সি-রাজনীতি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ইডি

শ্রীসারদাপীঠ
দেশের দক্ষিণ প্রান্তে আদি শঙ্কর প্রতিষ্ঠিত মঠটির নাম শ্রীসারদাপীঠ। দক্ষিণে মঠ প্রতিষ্ঠার জন্য কর্নাটকের শৃঙ্গেরীকে উপযুক্ত হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন শঙ্কর। বর্তমানে শঙ্করের দক্ষিণ মঠ বা শৃঙ্গেরী মঠের প্রধানের নাম শঙ্করাচার্য স্বামী ভারতী তীর্থ মহেশ্বরী।
জ্যোতির্পীঠ
দেশের উত্তর প্রান্তে আদি শঙ্কর যে মঠটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তার নাম জ্যোতির্পীঠ। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশীমঠে ওই মঠ রয়েছে। বর্তমান প্রধান হলেন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। ছেলেবেলায় সন্ন্যাস গ্রহণ করে সংসার ছাড়েন শঙ্কর। হিন্দু ধর্মের পথপ্রদর্শক হিসাবে তিনি দেশের চার প্রান্তে চারটি মঠ গড়ে তোলেন। হিন্দু ধর্মে এই শঙ্করাচার্যরা এখনও অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।
এরপরই শঙ্করের হাত ধরে শৃঙ্গেরী পীঠের দায়িত্ব পান সুরেশ্বরাচার্য। দ্বারকার মঠটির দায়িত্ব পান হস্তামলকাচার্য। পুরীতে আদি শঙ্করের গোবর্ধন মঠের দায়িত্ব পান তাঁর শিষ্য পদ্মপাদাচার্য। এছাড়া, উত্তর ভারতের জোশীমঠে শঙ্করাচার্যের মঠের প্রথম প্রধান হয়েছিলেন তোটকাচার্য। সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর সেই অযোধ্যাতেই সনাতন ধর্ম লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা জানিয়েছেন শঙ্করাচার্যরা। পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য জানিয়েছেন, তিনি অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না। পরে জোশীমঠের জ্যোতির্মঠপীঠের শঙ্করাচার্যও জানান, দেশের চার পীঠের চার শঙ্করাচার্যই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গঙ্গাসাগরের অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকার সমালোচনাও করেন পুরীর শঙ্করাচার্য।

Latest article