সুস্মিতা মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: অসংখ্য কংক্রিটের সেতু আর পাকা রাস্তা দিয়ে সদর মফস্বলের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে আজকের সুন্দরবন। যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় দ্রুত বদল হচ্ছে সুন্দরবনের জীবনচর্চা। আজ পাথরপ্রতিমার প্রত্যন্ত দ্বীপ থেকে সকালে কলকাতায় কোনও কাজে বেরিয়ে রাতের মধ্যে আবার ফিরে আসা যায় নিজের বাড়িতে। গত এগারো বছরে সুন্দরবনের দ্বীপগুলিকে জুড়ে দেওয়া হয়েছে বড় বড় সেতুর মাধ্যমে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝাঁ চকচকে পিচ ঢালাই রাস্তা। এমনকী তৈরি হয়েছে দু’লেনের রাস্তা।
আরও পড়ুন-নবান্নের রিপোর্ট তলব
কলকাতায় সায়েন্স সিটির পাশ থেকে দু’লেনের চওড়া বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে এখন সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় শেষ সড়ক গন্তব্য গদখালি ও ঝড়খালিতে। ক্যানিংয়ের মাতলা নদীর ওপর সেতু তৈরি হয়ে যাওয়ায় বারুইপুর থেকে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় গোসাবা, বাসন্তীতে। নামখানার হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর ওপর সেতু তৈরি হওয়ায় কলকাতা থেকে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় পর্যটনকেন্দ্র বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত এগারো বছরে বড় বড় বাজার তৈরি হয়েছে প্রত্যন্ত দ্বীপাঞ্চলে। শহরের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা বা পণ্য এখন মেলে বাজারে। দ্বীপের স্কুলগুলিতে ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। রাজ্য সরকারের সবুজসাথী ও কন্যাশ্রী প্রকল্পের জেরে ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহ বেড়েছে।
আরও পড়ুন-মলের পাশে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টল
হাইস্কুলের সংখ্যা বেড়েছে। এখন বাড়ির কাছের স্কুলে পড়াশোনা করা যায়। দ্বীপ এলাকায় তৈরি হয়েছে নতুন নতুন কলেজ ও আইটিআই। প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাতেও এগিয়ে চলেছে সুন্দরবনের ছেলেমেয়েরা। সুন্দরবনের একশো শতাংশ দ্বীপে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় ছোটখাটো শিল্প গড়ে উঠছে। এছাড়া স্বনির্ভর মহিলারা সরকারি সাহায্য পেয়ে নিজেদের তৈরি নানান উপকরণ বাজারে বিক্রির সুযোগ পেয়েছেন। পৃথিবীর অন্যতম বাদাবন এই সুন্দরবন পর্যটকদের কাছে বরাবরের আকর্ষণ। বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। পর্যটন বিকাশের ফলে হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। নামখানার মৌসুনির হোমস্টে ট্যুরিজম খুবই জনপ্রিয় হয়েছে।