প্রতিবেদন: দীপাবলির পর তিনদিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু রাজধানী দিল্লি, হরিয়ানা ও সংলগ্ন এলাকায় বায়ু দূষণের পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া তো দূরের কথা বরং আরও অবনতি হয়েছে। ভয়াবহ দূষণের কারণে দিল্লিতে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও বেসরকারি চিকিৎসকদের ক্লিনিকে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের লাইন পড়েছে বলা যায়। প্রতিটি হাসপাতালেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
আরও পড়ুন-সুব্রতদা পর্ব ২ : সুব্রতদার কথা শুনে তখন মাথায় বাজ!
দীপাবলির তিনদিন পরেও এখনও ঘন কুয়াশার চাদরে মুখ ঢেকে রেয়েছে দিল্লি। শুক্র ও শনিবারের তুলনায় রবিবার বাতাসের গুণমানের (একিউআই) কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও তা বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালেও রাজধানী দিল্লি ও নিকটবর্তী গুরগাঁও, গাজিয়াবাদ, নয়ডা, ফরিদাবাদ শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স বা বাতাসের গুণমান অত্যন্ত বিপজ্জনক মাত্রায় রয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গুরগাঁওয়ের। সেখানে বাতাসের গুণমান বা একিউআই হল ৪৬০। এরপরই আছে গাজিয়াবাদ ও নয়ডা। এই দুই জায়গায় বাতাসের গুণমান যথাক্রমে ৪৫৮ ও ৪৫৫। রবিবার খোদ দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ৪৩৬।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই মুহূর্তে রাজধানী দিল্লি ও সংলগ্ন শহরগুলির বাতাসের গুণমান বা একিউআই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে অতীব বিপদজনক। দিল্লি ও হরিয়ানায় বাতাসের গুণমান খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। দিল্লিতে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও দীপাবলির দিন যে পরিমাণ বাজি পুড়েছে তাতেই রাজধানী এই ভয়ঙ্কর সমস্যার মুখে পড়েছে। আইনি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিল্লিতে যেভাবে বাজি পুড়েছে তাতে অনেকেই অবাক হয়েছেন। বাজি পোড়ানো বন্ধ করতে পুলিশ ও প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। শনিবার দিল্লির বাতাসের গুণমান অতি ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছে ছিল।
এসবের জেরে রাজধানী দিল্লিতে বহু প্রবীণ ও শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরা সকলেই প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। সঙ্গে রয়েছে কাশি ও চোখ-মুখ জ্বালা। দিল্লি হরিয়ানা, পাঞ্জাবে এ সময় প্রতিবছরই বায়ুদূষণ চরমে ওঠে। কারণ দীপাবলির বাজি ছাড়াও এ সময়েই এই রাজ্যগুলিতে ফসলের গোড়া পোড়ানো হয়। ফসলের গোড়া পোড়ানোর ফলে বাতাসে প্রচুর কার্বন মেশে। যা মানুষের স্বাভাবিক শ্বাস ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়।
আরও পড়ুন-নোট বন্দির পাঁচ বছর, মোদিকে তুলোধোনা ডেরেকের
দিল্লিতে বাতাসের পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে ইতিমধ্যেই রাস্তায় জল ছেঁটানোর কাজ শুরু করেছে কেজরিওয়াল সরকার। পাশাপাশি জোড়-বিজোড় নম্বরের গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা করা হবে কিনা সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। চিকিৎসক রাজেশ চাওলা জানিয়েছেন, দিল্লিতে এবং সংলগ্ন এলাকায় অবিলম্বে দূষণ কমানো না গেলে তা সাধারন মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ হয়ে দাঁড়াবে। দূষণের কারণে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় পড়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রবল দূষণের জেরে আতঙ্কে ভুগছেন রাজধানীর মানুষ। যে কারণে চিকিৎসকরা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগা মানুষকে বাড়িতেই থাকতে অনুরোধ করেছেন।